ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছেন ৩১ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী। তারা এক লাখ চার হাজার ৬৬৫টি ‘স্ক্রিপ্ট’ বা বিষয়ের খাতা পুনর্মূল্যায়নের আবেদন করেছেন। আগামী ১০ মার্চ পুনর্নিরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
২০২২ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ হয়। এ পরীক্ষায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট দুই লাখ ৭৬ হাজার ৯৩৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। তাদের মধ্যে দুই লাখ ৪৩ হাজার ২২১ জন উর্ত্তীণ হয়েছেন।
তবে প্রকাশিত ফলাফলে অসন্তুষ্ট হয়ে খাতা পুনর্মূল্যায়নের জন্য ৩১ হাজার ৫৭৪ জন শিক্ষার্থী ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করেছেন। এসব শিক্ষার্থী মোট এক লাখ চার হাজার ৬৬৫টি ‘স্ক্রিপ্ট’ বা বিষয়ের খাতা পুনর্মূল্যায়নের আবেদন করেছেন বলে শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এছাড়াও দেশের নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি বোর্ডেও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেছেন। তবে অন্যান্য বোর্ডের আবেদনকারীর সংখ্যাটি এখনো জানা যায়নি।
শিক্ষা বোর্ড সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিবছর ফল চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেন লাখের ওপর শিক্ষার্থী। এরমধ্যে আবেদনের শীর্ষে রয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার এ সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। এক বছরে এইচএসসি পরীক্ষার খাতা পুনর্মূল্যায়নের আবেদন বেড়েছে ৬৫ শতাংশ। তাদের আবেদনের মোট বিষয়ের সংখ্যাই এক লাখ পাঁচ হাজারের মতো।
জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার রোববার (৫ মার্চ) জাগো নিউজকে বলেন, এবার তুলনামূলক বেশি আবেদন জমা হয়েছে। এসব খাতার নম্বর পুনরায় যাচাই করে আগামী ১০ মার্চ ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর খাতা পুনর্মূল্যায়নে রীতিমতো চাপে রয়েছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডর কর্মকর্তারা। গত কিছুদিন ধরে শিক্ষা বোর্ডে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা খাতা পুনর্মূল্যায়নের কাজ চলছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আবুল বাশার জাগো নিউজকে বলেন, বিপুল সংখ্যক খাতা পুনর্নিরীক্ষণে স্বাভাবিকই বোর্ডের ওপর একটা চাপ পড়তে পারে। তবে এক্ষেত্রে পুনর্নিরীক্ষণে যেহেতু খাতা পুনরায় মূল্যায়ন হয় না, তাই খুব বেশি সময় প্রয়োজন হবে না। ডিজিটাল সিস্টেম এসব করে দেয়।
পুনর্মূল্যায়নে যেসব বিষয় দেখা হয়
পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন হওয়া উত্তরপত্রের চারটি দিক দেখা হয়। এগুলো হলো, উত্তরপত্রের সব প্রশ্নের সঠিকভাবে নম্বর দেওয়া হয়েছে কি না, প্রাপ্ত নম্বর গণনা ঠিক রয়েছে কি না, প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে ওঠানো হয়েছে কি না এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী ওএমআর শিটের বৃত্ত ভরাট করা হয়েছে কি না। এসব পরীক্ষা করেই পুনর্নিরীক্ষার ফল দেওয়া হয়। তবে কোনো পরীক্ষক কোনো একটি প্রশ্নের উত্তরের জন্য যে নম্বর দিয়ে থাকেন সেটি পরিবর্তনের সুযোগ নেই।
যেমন, পরীক্ষক একটি প্রশ্নের উত্তরের জন্য ৬ নম্বর দিয়েছেন, সেটি ভুলবশত ৩ নম্বর হিসেবে গণনা করা হলো- এ ধরনের ভুল সংশোধন করা হয়। এক্ষেত্রে কোনোভাবে পরীক্ষার্থীরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তা বিবেচনায় রাখা হয়। কিন্তু এই ৬ নম্বরের পরিবর্তে ৮ করার সুযোগ নেই।