রাজবাড়ীর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. কবিরুল আলমের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীসহ গণপূর্তের ঠিকাদাররা এসব অভিযোগ করেছেন।
রাজবাড়ী থেকে দুই প্রকৌশলীকে অপসারণসহ তাদের অনিময় ও দুর্নীতি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খানের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে জেলা প্রশাসকের কাছে অনিয়ম ও দুর্নীতির লিখিত অভিযোগ দেন রাজবাড়ী গণপূর্ত বিভাগের ঠিকাদাররা।
জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রাজবাড়ীর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মাদ মনিরুজ্জামান ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. কবিরুল আলম অর্থের বিনিময়ে নিজস্ব ঠিকাদার নিয়োগ করেন। রাজবাড়ীর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার কাজ সম্পূর্ণ না করে চূড়ান্ত বিল পরিশোধ করেছেন। সেখান থেকে তিনি অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। সপ্তাহে মাত্র দুই দিন অফিস করা এবং অফিসে যথাসময়ে উপস্থিত না থাকা, জাতীয় শোক দিবসসহ জাতীয় কোনো অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত থাকেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. কবিরুল আলম দীর্ঘ ১২ বছর রাজবাড়ীতে চাকরি করছেন। ২-৩ জন নিজস্ব ঠিকাদারের যোগসাজশে তিনি ঠিকাদারি কাজ করেন থাকেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে দুই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো তদন্ত করার জন্য অনুরোধ করেন অভিযোগকারীরা।
রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী বলেন, রাজবাড়ীর সাধারণ মানুষ ও ঠিকাদারবৃন্দ আমার কাছে এসেছিলেন। দুই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে আসা এসব অভিযোগ তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আমি রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অনুরোধ করেছি।
রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হেদায়েত আলী সোহরাব বলেন, রাজবাড়ীর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. কবিরুল আলমের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে আমরা রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমরা তার অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগগুলোর তদন্ত চাই। তাকে রাজবাড়ী থেকে অপসারণ করে এসব অভিযোগ তদন্ত করে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হোক।
জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান বলেন, রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী মহোদয়সহ বেশ কয়েকজন ঠিকাদার গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. কবিরুল আলমের বিরুদ্ধে আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা সেগুলোর তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের কার্যালয়ে গেলে দেখা যায় তিনি তার কক্ষে নেই। পরে তাকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, আমি বাংলোতে আছি। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন। পরে আধাঘণ্টা অপেক্ষা করার পর তিনি তার কক্ষে আসেন।
এরপর তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামা বলেন, আমি প্রকল্প বাস্তাবায়ন কাজের জন্য মাঠে থাকি। আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সত্য নয়।