দেশে জ্বালানি তেলের প্রায় পুরোটাই মিটে আমদানি করে। এর বাইরে কয়লা ও গ্যাসও আনতে হয় আংশিক হারে। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে বিশ্ববাজারের চড়া দাম আমদানি ব্যয় বাড়িয়ে দিয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। অন্যদিকে নতুন দুশ্চিন্তা হিসেবে সামনে এসেছে ডলার সঙ্কট। ফলে এক রকম ত্রিমুখী চাপে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ব্যবহার কমাতে নানামুখী সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলো সরকার। চলমান সংকট মোকাবেলায় জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকারের হাতে বিকল্প কোনো উপায় ছিল না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ম তামিম বলেন, বর্তমানে জ্বালানি মূল্য বিশ্বব্যাপী যে হারে বেড়েছে, তাতে আমাদের এলএনজির ওপর যে নির্ভরশীলতা তার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের এনার্জি মূল্যটা অনেক বেশি হয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি খুব শিগগিরই এর সমাধান হবে। আমি খুবই আশাবাদী তেল ও কয়লার দাম খুব দ্রুতই কমে যাবে।
বর্তমানে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির বাইরে খোলা বাজার থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ রেখেছে সরকার। কারণ, প্রতি ইউনিটে ব্যয় বেড়েছে ১০ গুণের মতো। ফলে কয়েক মাস ধরেই সরবরাহ কমেছে বিদ্যুৎকেন্দ্রে। যা উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত।
এই সঙ্কটের খানিকটা মেটানো হতো তেলচালিত সব কেন্দ্র চালু রেখে। নতুন সিদ্ধান্তে সেখান থেকেও উৎপাদন কমবে বেশ খানিকটা। বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের সংগঠনও মনে করে বর্তমান বাস্তবতায় এই সিদ্ধান্তের বিকল্প ছিল না সরকারের হাতে।
বাংলাদেশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইমরান করিম বলেন, ডিজেল চালিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে খরচ হয় তা দিয়ে রাষ্ট্র যদি ভর্তুকির পরিমাণ বাড়িয়ে ফেলে এবং ডলারের দাম যদি আরও বেড়ে যায়; তাহলে জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। এ অবস্থায় যাওয়ার আগেই আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার।
এ বিষয়ে সচিবালয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, শিল্পোৎপাদনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতেই এমন সিদ্ধান্ত সরকারের। আমরা চাই না শিল্পাঞ্চল এলাকা যেন বন্ধ না হয়। আমাদের এখন দেখা দরকার আমরা কতটুকু বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী করে চলতে পারব।