লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় অপহরণের পাঁচদিন পর এক প্রধান শিক্ষকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অপহরণের শিকার নূরুল আমিন উপজেলার দোলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
গ্রেফতাররা হলেন, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ভোলারপাড়া এলাকার আব্দুল বারী (৪৩) ও নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার ভূগী এলাকার শফিউল আলম (৩২)।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় লালমনিরহাট পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি সকালে অজ্ঞাতপরিচয় ১২/১৩ জন লোক একটি কালো রঙের মাইক্রোবাস ও একটি সাদা রঙের প্রাইভেটকার নিয়ে ওই শিক্ষকের বাড়ির সামনে দাঁড়ান। এসময় অপহরণকারীদের একজন বাড়ির মূল দরজার দেওয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে দরজা খুলে দিলে বাইরে থাকা অন্যরা ভেতরে ঢোকেন। এসময় ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে প্রথমে শিক্ষকের ভাই মো. রুহুল আমিনের ঘরে ঢুকে তাকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যেতে থাকেন। তখন নুরুল আমিন ঘর থেকে বের হলে অপহরণ করতে আসা ব্যক্তিরা রুহুলকে ছেড়ে দিয়ে নুরুলকে ধরে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যেতে থাকেন।
এসময় শিক্ষকের স্ত্রী মাহফুজা বেগম, ভাই রুহুল আমিন এবং অন্যরা অপহরণকারীদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা এসপি অফিসের লোক বলে জানান। তাদের কাছে পুলিশের আইডি কার্ড দেখতে ও নূরুলকে নিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাওয়ায় বাড়ির লোকজনদের এলোপাতাড়ি পেটান। এতে শিক্ষকের চাচা আবু তালেব ও ভাই রুহুল আমিন আহত হয়। পরে ওই শিক্ষককে জোর করে গাড়িতে তুলে লালমনিরহাট অভিমুখে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ঘটনায় ৭ জানুয়ারি আদিতমারী থানায় অপহৃত শিক্ষক নূরুল আমিনের ছেলে বাদী হয়ে অপহরণ মামলা করলে পুলিশ শিক্ষক নূরুল আমিনকে উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করে। টানা পাঁচদিন অনুসন্ধান চালিয়ে অপহৃত শিক্ষক ও অপহরণকারীদের অবস্থান শনাক্ত করে বুধবরা ভোরে আদিতমারী থানা পুলিশের একটি দল ঢাকার তেজগাঁও থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়। এসময় অপহরণের সঙ্গে জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিন এবং অপহরণকারীদের মধ্যে আগের টাকা লেনদেনের বিষয় থাকতে পারে। ঘটনার প্রকৃত রহস্য ও অপহরণের প্রকৃত কারণ তদন্ত সাপেক্ষে উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।