যুক্তরাজ্যে ছড়াচ্ছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট, বাড়ছে উদ্বেগ

নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের নাম ‘এরিস’ এবং যুক্তরাজ্যে এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এই ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোসাভাইরাসের নতুন একটি রূপ যুক্তরাজ্যজুড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং এটি দেশের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মধ্যে শঙ্কা সৃষ্টি করছে বলে জানিয়েছে ইউকে হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি (ইউকেএইচএসএ)।

বার্তাসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের ইজি.৫.১ ভ্যারিয়েন্টটি এরিস নামে পরিচিত এবং এটি করোনার আরেক রূপ ওমিক্রন থেকে এসেছে। গত মাসে যুক্তরাজ্যে করোনার এই ধরনটি প্রথম শনাক্ত হয়।

সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, যুক্তরাজ্যে কোভিডের নতুন আতঙ্ক হয়ে উঠছে নয়া ভ্যারিয়েন্ট এরিস। গত ৩ জুলাই কোভিডের নতুন এই স্ট্রেনের খোঁজ পাওয়া যায়। বর্তমানে মোট কোভিড আক্রান্তের মধ্যে ১৪ শতাংশ ভাইরাসের এই ধরনে আক্রান্ত।

মূলত সংক্রমণের হারের কারণে এরিস ব্রিটিশ প্রশাসনের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ মাত্র ৩ সপ্তাহের মধ্যে ভাইরাসে সংক্রমিতদের ১৪ শতাংশ নাগরিক এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন।

সংবাদমাধ্যম বলছে, ইউরোপের এই দেশটিতে গত জুলাই মাসের শুরু থেকেই দ্রুত হারে বাড়তে শুরু করে ভাইরাসের সংক্রমণ। প্রতি নয়জনের মধ্যে একজন করে এই রোগে আক্রান্ত হতে থাকে। এছাড়া কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যা এখনও বাড়ছে এই দেশে।

সম্প্রতি ৪৯৩৬ জন ফুসফুস সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তাদের মধ্যে বর্তমানে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ কোভিডে আক্রান্ত। তাদের বিশেষ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্টের মতে, করোনার নতুন ধরন এরিসের পাঁচটি সাধারণ উপসর্গ রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- নাক দিয়ে পানি পড়া, মাথাব্যথা, ক্লান্তি, হাঁচি এবং গলা ব্যথা। এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে হচ্ছে এবং সাম্প্রতিককালে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি এবং হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইউকেএইচএসএ-এর ইমিউনাইজেশন প্রধান ড. মেরি রামসে বলেছেন, ‘আমরা এই সপ্তাহের প্রতিবেদনে করোনার সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি দেখতে পাচ্ছি। এছাড়া বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তির হারও অল্প বৃদ্ধি পেতে দেখেছি। হাসপাতালে ভর্তির সামগ্রিক পরিমাণ এখনও অত্যন্ত কম এবং বর্তমানে আইসিইউতে ভর্তি বাড়ছে এমন চিত্র দেখতে পাচ্ছি না।’

তবে কর্মকর্তারা বলছেন, করোনার নতুন সংক্রমণ বাড়তে থাকায় তারা ‘ঘনিষ্ঠভাবে’ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বলেছেন, যদিও ভ্যাকসিন নেওয়া থাকলে এবং অতীতে ভাইরাসে সংক্রমিত হলে মানুষ আরও ভালো সুরক্ষিত থাকে, তারপরও ভাইরাস মোকাবিলায় জারি করা বিধিনিষেধগুলো শিথিল করা উচিত নয়।

গেব্রেইয়েসুসের উদ্ধৃতি দিয়ে স্কাই নিউজ বলেছে, ‘উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা লোকদের জনাকীর্ণ জায়গায় মাস্ক পরার পরামর্শ দিচ্ছে ডব্লিউএইচও। এছাড়া সময় হলে টিকার বুস্টার ডোজ নিয়ে নিতে এবং বাড়ির ভেতরে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল নিশ্চিত করার জন্যও আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।’

একইসঙ্গে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ইতোপূর্বে জারি করা বিধিনিষেধগুলো বাতিল বা শিথিল না করতেও দেশগুলোর কাছে ডব্লিউএইচও অনুরোধ করছে বলেও জানিয়েছেন টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস।

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Welcome Back!

Login to your account below

Create New Account!

Fill the forms below to register

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.