বিদ্যুৎ নিয়ে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশের করা চুক্তি বাতিল চায় বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার তাদের নিজেদের স্বার্থে, ক্ষমতায় টিকে থাকার স্বার্থে সম্প্রতি ভারতের একটি কোম্পানি, যারা অত্যন্ত বড়, যারা ইতোমধ্যে বিশ্বে অর্থনীতিতে বদনাম কুড়িয়েছে, সেই আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয়ের চুক্তি করেছে। যে চুক্তি সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থের বিরোধী। এখানে বড় রকমের দুর্নীতি হয়েছে। এই দুর্নীতির কারণে তারা জনগণের পকেট থেকে প্রচুর টাকা কেটে নিয়ে যাবে। আমরা এই চুক্তি বাতিল চাই।
রোববার (৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণের লাভ হবে না এমন কোনো চুক্তি আমরা গ্রহণ করতে রাজি নই।
সরকার মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েছে। তিনবার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে, গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে, জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে।
সায়েন্সল্যাব ও সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণে ঘটনায় নিহতদের প্রতি শোক জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে দেশে বারবার বিস্ফোরণ হচ্ছে কেন। এসব বিস্ফোরণের মূল কারণ কী তা তদন্ত করে বের করা উচিত। সরকার যখন ব্যর্থ হয়, তখন তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো যারা এসব দেখাশোনার দায়িত্বে থাকে সব কিছু সঠিকভাবে আছে কি না, যেন বিস্ফোরণ না ঘটে। দুর্ঘটনা ঘটলে যেন মানুষের জীবননাশ না হয় সেই ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে কি না। সরকারি সংস্থাগুলো সেখানে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। সরকারের ব্যর্থতার কারণে সারা দেশে ভয়াবহ দুর্ঘটনাগুলো ঘটছে।
পঞ্চগড়ের সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের প্রশ্ন হলো সেখানে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হলো কেন, আর যখন আক্রমণ হয়েছে তখন পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকে সেটা দেখলো কেন। কেন সেটা প্রতিহত করতে সক্ষম হলো না? আমরা মনে করি, সরকার অত্যন্ত অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে দেশে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটাচ্ছে। দেশে যখন মানুষ তার অধিকার আদায়ে একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন শুরু করেছে, মানুষ যখন সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলো যখন নেমে এসেছে, তখন এটাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য, বিভ্রান্ত করার জন্য এসব ঘটাচ্ছে।
বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে অংশ নেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। অন্যদিকে গণতান্ত্রিক ঐক্যের সমন্বয়ক হারুন আল রশিদের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল বৈঠকে অংশ নেয়।