তোষাখানা মামলায় মিথ্যা বিবৃতি জমা দেওয়ার অভিযোগে পিটিআই প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। শুক্রবার (২১ অক্টোবর) এমন ঘোষণা দিয়েছে ইসিপি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সিকান্দার সুলতান রাজার নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ ইসলামাবাদে ইসিপি সচিবালয়ে এই রায় ঘোষণা করেন।
পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেয়। তবে আজকের ঘোষণার জন্য পাঞ্জাবের সদস্য উপস্থিত ছিলেন না।
রায়ে বলা হয়েছে, ভুল ঘোষণার জন্য ইমরানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা শুরু হবে।
রায় ঘোষণার পরপরই ইমরানের দল পিটিআইয়ের নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী ইসিপির বাইরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে জনসাধারণকে “তাদের অধিকারের জন্য” বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে বলেছিলেন।
তিনি ইসিপির এ রায়কে ‘২২ কোটি মানুষের মুখে চড়’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘আজ বিপ্লবের সূচনা হলো।’
এ পিটিআই নেতা বলেন, ‘কেউ ইমরান খানকে অযোগ্য ঘোষণা করতে পারে না। কেবল পাকিস্তানের জনসাধারণই তা করতে পারে।
তিনি অভিযোগ করেন যে আজকের রায় “নওয়াজ শরিফ লিখেছেন এবং তার চাকররা স্বাক্ষর করেছেন। পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ এমন সিদ্ধান্তকে অস্বীকার করেছে।’
এছাড়া পিটিআই নেতা শাহবাজ গিল বলেছেন, পিটিআই রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিটি ফোরামে যোগাযোগ করবে। তিনি আরও বলেন, ইমরানকে শুধু একটি আসন থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে, রাজনীতি থেকে নয়।
ইসিপির ঘোষণার আগে টেলিভিশন ফুটেজে পিটিআই নেতাদের কমিশনের সচিবালয়ে পৌঁছানোর জন্য গেটের ওপরে উঠতে দেখা গেছে।
এর আগে শুক্রবারের রায়ের আগে ইসিপির কার্যালয়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। অসংখ্য পুলিশ, রেঞ্জার্স ও ফ্রন্টিয়ার কোরের সদস্যরা ঘটনাস্থলে মোতায়েন ছিলো।
এ রায়ের আগে পিটিআই নেতারা পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) তীব্র সমালোচনা করেছেন। তারা জানিয়েছেন, ইসিপি তাদের সঙ্গে পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে।
রায়ের কয়েক ঘণ্টা আগে ইমরানের আইনজীবী ব্যারিস্টার আলি জাফর ইসলামাবাদে একটি সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন এবং পিটিআই প্রধানের পক্ষে আইনি যুক্তিগুলো তুলে ধরেন। তিনি পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বন্দিয়ালের একটি সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণের কথা উল্লেখ করেছেন। যেখানে শীর্ষ বিচারক বলেছিলেন যে সংবিধানের ৬২(১)(চ) অনুচ্ছেদের অধীনে একজন আইন প্রণেতাকে আজীবনের জন্য অযোগ্যতা প্রদান শুধুমাত্র একটি আদালতের ঘোষণার মাধ্যমে করা যেতে পারে। যেহেতু ইসিপি কোনো আদালত নয়, সেহেতু তারা প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে না।