এবার জর্জিয়ার দুই অঞ্চলকে অধিভুক্ত করার হুমকি রাশিয়ার

 

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য তদবির শুরু করায় সাবেক সোভিয়েত রাজ্য জর্জিয়াকে হুমকি দিয়েছেন রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমানে দেশটির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থা রাশিয়ান সিকিউরিটি কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ।

বুধবার একটি রুশ দৈনিক পত্রিকায় লেখা এক কলামে মেদভেদেভ বলেছেন, জর্জিয়া যদি তদবির বন্ধ না করে– সেক্ষেত্রে দেশটির দুই স্বাধীনতাকামী অঞ্চল দক্ষিণ ওসেটিয়া এবং আবখাজিয়াকে রাশিয়ার মানচিত্রভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

আর্গুমেন্টি আই ফ্যাক্টি পত্রিকায় লেখা ওই কলামে মেদভেদেভ লেখেন, ‘আবখাজিয়া এবং দক্ষিণ ওসেটিয়ার জনগণ রাশিয়াকে ভালবাসেন। যদি তারা আমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে চান, সেক্ষেত্রে তাদের আগ্রহ বাস্তবায়নে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।’

৬৯ হাজার ৭০০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দেশ জর্জিয়া ভৌগলিকভাবে একটি আন্তমহাদেশীয় দেশ। জর্জিয়ার মোট ভূখণ্ডের চারভাগের তিন অংশ পড়েছে পূর্ব ইউরোপে এবং বাকি অংশ পড়েছে পশ্চিম এশিয়ায়। ১৯৯১ সালে সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যে ১৫টি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব হয় জর্জিয়াও সেসবের মধ্যে অন্যতম।

আবখাজিয়া ও দক্ষিণ ওসেটিয়ায় বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা শুরু হয় স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে জর্জিয়ার উত্থানের পর থেকেই। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকেই এই দুই অঞ্চলে স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়, যা এখনও চলছে।

২০০৮ সালে আবখাজিয়া ও দক্ষিণ ওসেটিয়ার স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি রাশিয়া। তারপর থেকে এই দুই অঞ্চলের স্বাধীনতাকামী রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোকে বিভিন্ন সহায়তা দিয়ে আসছে মস্কো।

এদিকে ভৌগলিক অখণ্ডতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে ন্যাটোর সদস্য হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে জর্জিয়া। সম্প্রতি ন্যাটোর ওয়েবসাইটে জর্জিয়া সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘জর্জিয়া ন্যাটো জোটের ঘনিষ্ঠ অংশীদারদের একটি।’

এতে আরও বলা হয়েছে, ন্যাটোর সদস্য হতে চায় জর্জিয়া। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ন্যাটো ও জর্জিয়ার মধ্যে একটি ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এই সম্পর্ক জর্জিয়ার সংস্কার প্রচেষ্টা ও ইউরো-আটলান্টিক এক করার ধারণাকে সমর্থন করে।

বুধবারের কলামে মেদভেদেভ বলেন, ‘জর্জিয়ার ন্যাটোভুক্ত হওয়ার বিষয়ে আমাদের আশঙ্কা যদি বাস্তবতার কাছাকাছিও যায়, তাহলে আমরা আর পাল্টা পদক্ষেপ নিতে অপেক্ষা করব না।’

জর্জিয়ার প্রতি মেদভেদেভের এই হুমকিকে অনেকটা ইউক্রেনের মতো বিবেচনা করছেন অনেক পশ্চিমা রাজনীতি বিশ্লেষক। কিয়েভের ন্যাটোতে যুক্ত হওয়ার প্রচেষ্টায় রাশিয়া অসন্তুষ্ট হয়েছিল। তার জেরে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী।

অভিযান শুরুর ৬ মাস পর, অক্টোবরে দনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও ঝাপোরিজ্জিয়া— ইউক্রেনের এই চার প্রদেশকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেয় মস্কো।

 

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Welcome Back!

Login to your account below

Create New Account!

Fill the forms below to register

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.