ঈদ সারপ্রাইজ নিরন্তর আমাদের জীবনে ঘটে চলছে নানা ধরনের ঘটনা। যা হয় কখনো দারুণ, কখনো বা নিদারুণ। তবে কিছু ঘটনা রঙ্গন ফুলের মতন ফুটে থাকে সৃতির পাতায়। তেমনি এক ফুল নিয়ে এসেছে “ঈদ সারপ্রাইজ ‘। আজ ঈদ, আনন্দের আকাশে অজস্র ধারায় বৃষ্টি বইছে। চারিদিকে খুশির মেলা, প্রাকৃতিরাও আজ থৈথৈ করছে। তবে, আমার কাছে পরাজিত সকলের আনন্দ! কারণ এ ঈদে আমি ও আমার মা-বাবা আমরা সকলেই নতুন জামা পরেছি। আমি ও বাবা, আমরা এখন মসজিদে যাচ্ছি। তবে যবার আগে একটি কথা বলি, সারপ্রাইজের কথা মনে আছে তো? নামায শেষে শুরু হলো আলিঙ্গনের ঝড়, পুরো মাঠ যেন প্রীতির হাওয়ায় দুলছে। ও মা, একী? সালামের আগেই সালামি! ও-হ কী মচৎকার! মনে হচ্ছে উৎসবের সৈন্যদের হাতে ঘেরাও হচ্ছি। বাসায় এসে পাঞ্জবিটা খুলে একটু বসলাম। আম্মিজান তার ঈদ আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত। বাবা প্রতিবেশীদের ঈদ শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। আর আমি, ভাবছি কোথায় ঘুরতে যাবো? এমন সময় বাবার ফোনে এলো এক কল। ফোনটা নিয়ে দিলাম বাবাকে।
এমন নিতান্ত সাধারণ আমার কোন কৌতূহল নেই, তবে আমি শুনে হতভম্ব! বাবা ফোনে বলছিল `সাইডে এসেছি, এবার বলুন;। কী এমন কথা, যে সাইডে যেতে হবে? কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। ফোন আলাপ শেষে বাবা বলল `সবাই দ্রুত তৈরি হয়ে নাও আমরা চাঁদপুর যাবো। হঠাৎ চাঁদপুর কেন কী হয়েছে? অবাক সুরে বললেন `আম্মিজান’। বাবা মুখে হাসির ছাপ নিয়ে বললেন, বেড়াতে যাবো। বাবার মুখের হাসি ও চোখের তারা বলছে, কোন সারপ্রাইজ আছে। এখন মাটি চাপা থাকলেও কিছুক্ষণ পরেই চমক দেখাবে! ইতোমধ্যে আমরা চাঁদপুর এসে গিয়েছি।
বাড়িতে প্রবেশ কালে দেখলাম লোকজনের ভিড়-সমাগম! ঘরের ভেতর পায়ের কদম ফেলতেই আমাদের দেখে হাউমাউ করে কেঁদে উঠল সকলে! এটাই কি তাহলে হাসির ভেতর লুকিয়ে থাকা সারপ্রাইজ? আমাদের প্রাণপ্রিয় খালাত ভাই আজ সবার আনন্দকে জলে ভাসিয়ে পাড়ি দিয়ছে না ফেরার দেশে। সবার আনন্দ আজ অশ্রু জলে সিক্ত। চারদিকে শোকের মাতম। কেউ বিশ্বাসই করতে পারছে না তিনি নেই। পত্রিকা অফিস তাঁর কর্মস্হলের সহকর্মী ,বন্দু, পাড়াপড়শি সবার মুখে একই কথা কিছুক্ষণ আগেই তো কথা বললাম, ঈদের নামাজ শেষেতো আলিঙ্গন করলাম। নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছে না কেউ। কিন্তু এটাই বাস্তবতা। মাত্র কিছু সময়ের ব্যবধান। ইতিহাসের পাতায় দীপ্তমান সূর্যের মত উজ্জল হয়ে থাকবে শ্রদ্ধা ভরা তাঁর নামটি “আবু তালেব হোসেন বাবলু”।
মুহাম্মাদ নাজমুস শাহরিয়ার গালিব (সামি তপাদার)