ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো দুই দেশের বহুমুখী সহযোগিতার দৃঢ় অংশীদারত্ব উচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করার জন্য পাঁচটি চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছেন। জাপানের রাষ্ট্রদূতের চিহ্নিত ৫টি চ্যালেঞ্জ হলো—বাংলাদেশ-জাপান কৌশলগত অংশীদারত্ব উন্নয়ন করা, বাংলাদেশকে বিনিয়োগের জন্য আরও আকর্ষণীয় করা, জনগণের মধ্যে বিনিময় সম্প্রসারণ, অবাধ ও মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানো এবং এই অঞ্চলে ও এর বাইরে বাংলাদেশের সম্মান বাড়ানোর জন্য প্রচেষ্টা জোরদার করা।
রোববার (২৫ জুলাই) কসমস গ্রুপ আয়োজিত এক অনলাইন সংলাপে রাষ্ট্রদূত ইতো বলেন, আমাদের এগিয়ে যাওয়া দরকার। আমি মনে করি আমাদের সম্পর্কগুলো প্রাকৃতিকভাবে প্রতিটি এজেন্ডার মধ্যে গভীরতর হবে। কসমস গ্রুপের প্রতিষ্ঠান কসমস ফাউন্ডেশন ‘বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক: ভবিষ্যতের পূর্বাভাস’ শীর্ষক সংলাপটি আয়োজন করে।
সংলাপে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান। সভাপতিত্ব করেন প্রখ্যাত কূটনীতিক ও সাবকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী। আলোচক প্যানেলে ছিলেন জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত ফোরামের বিশেষ দূত মো. আবুল কালাম আজাদ, জাইকা বাংলাদেশ অফিসের প্রধান প্রতিনিধি হায়াকাওয়া ইউহো, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, টোকিও’র স্যাক্রেড হার্ট বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক মাসাকা ওহাশি, সাংবাদিক ও লেখক মনজুরুল হক, টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব পাবলিক পলিসির ডীন অধ্যাপক তাকাহারা আকিও এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম।
রাষ্ট্রদূত ইতো বলেন, দুই দেশের উচিত সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা উপভোগ করা এবং আরও উন্নত করার জন্য সচেতন এবং প্রাণান্তকর চেষ্টা করা। আমাদের নিজেদের সম্পর্কে আত্মতুষ্ট হওয়া উচিত নয়। তিনি বলেন, ২০২২ সাল অংশীদারত্বকে আরও উচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করার জন্য একটি চমৎকার সুযোগ দেবে এবং আমি আশাবাদী যে, দুটি দেশই এই অংশীদারত্বকে ‘সত্যিকারের কৌশলগত অংশীদার’ হিসেবে অভিহিত করতে পারবে।
রাষ্ট্রদূত ইতো বলেন, বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথের (বিগ-বি ইনিশিয়েটিভ) অধীনে মানসম্মত অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং যোগাযোগের জোরদারকরণ কেবল বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্যই নয়, আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যও উপকারী হবে।
তিনি বলেন, এই বিগ-বি কেবল বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য নয়, সমগ্র বে অব বেঙ্গল অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্যও খুব গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ও জাপান আগামী বছর কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করবে বলেও উল্লেখ করেন জাপানি রাষ্ট্রদূত।
এনায়েতুল্লাহ খান বলেন, জাপানের ভূ-কৌশলগত ভূমিকা ও অবস্থান এবং বাংলাদেশের প্রতি তার প্রতিশ্রুতি এখনও বিশ্বস্ত রয়েছে যা বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়নে তাদের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। তিনি বলেন, আমার মনে হয় বাংলাদেশ-জাপান বন্ধুত্ব কেবল পারস্পরিক স্বার্থের জন্য নয়, মূলত খাঁটি সহানুভূতিরই একটি অংশ।