২০১৬ সালে ব্রাজিলের মারাকানায় রিও অলিম্পিক গেমসের সমাপণীর রাতে তখনকার জাপানের প্রধানমন্ত্রী সিনজো আবে স্পট লাইটে ঘূর্ণায়মান গাড়িতে উঠে সবাইকে টোকিও অলিম্পিক গেমসে আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেছিলেন ওয়েলকাম টু টোকিও ২০২০।
সেই দিনের এমন অভিনব পন্থায় গেমেস উপভোগ করার আমন্ত্রণের ছবিটি আজও মনের মধ্যে ভেসে উঠে। একটা দেশের প্রেসিডেন্টকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তা অকল্পনীয়। মারাকানায় সেদিন আলোকসজ্জায় ভরে উঠেছিল। আলোর রোশনাই ছড়িয়ে গিয়েছিল জাপানে। কিন্তু কে জানত পরের আসর ৩২তম অলিম্পিক হবে দুনিয়া জুড়ে উৎকণ্ঠায়। কি এক অজানা রোগ যখন-তখন ছুঁয়ে ফেলবে দুনিয়ার মানুষকে। প্রতিষেধক টিকা এলেও সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ এখনো আতঙ্কে।
এত কঠিন নিয়মের মধ্যেও করোনা ঠিকই গেমসে ঢুকে পড়েছে। এরই মধ্যে গেমসের সঙ্গে জড়িত ক্রীড়াবিদ, কোচ, কর্মকর্তাসহ প্রায় ১০০ জনের কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। করোনার কারণে জাপানের মানুষ উৎণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে। একটা বছরের বেশি সময় হয়ে গেল করোনায় কত প্রাণ গেছে। ২০২০ সালে টোকিও অলিম্পিক গেমস হওয়ার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে সেটি এক বছর পিছিয়ে ২০২১ করা হলো। এক বছর অপেক্ষার পরও করোনা হতে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজে পাওয়া যায়নি এখনো। জাপানের অবস্থা খুবই খারাপ এখন। টোকিও অলিম্পিক গমেস হবে কি না, তা নিয়ে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অনিশ্চিয়তা ছিল। শেষ পর্যন্ত গতকাল টোকিও সময় সন্ধ্যায় অলিম্পিক গেমস উদ্বোধন হয়ে গেল। দর্শকবিহীন উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, এমন অলিম্পিক গেমস কবে দেখেছিল দর্শক।
জাপানের মানুষ অলিম্পিকের পক্ষে ছিলেন না। একটা অংশ পক্ষে মত দিয়েছেন। কাল যখন গেমস উদ্বোধন হয় তখন স্টেডিয়ামের বাইরে কিংবা জাপানের ঘরে ঘরেও টিভির পর্দায় গেমস দেখেছেন বেশির ভাগ জাপানি। করোনা মহামারির মধ্যে গেমস উদ্বোধনের কিছুটা সময় যেন প্রশান্তির ছোঁয়া পেয়েছিলেন জাপানিরা। আকাশে রংধনু ছড়ানো হয়েছে বিমান হতে। আতশবাজির স্ফুরণ ঘটেছে টোকিও অলিম্পিক স্টেডিয়ামের ছাদের ওপর। এই সময়টা জাপানিরা কিছুক্ষণের জন্য করোনার মহামারি যেন ভুলে গিয়েছিলেন। স্বস্তিতে কাটিয়েছেন। ছবি তুলেছেন।
এত কিছুর মধ্যে অলিম্পিক বিরোধিরা অলিম্পিক না করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। পুলিশ তাদের ঠেকিয়েছে। টোকিও স্টেডিয়ামের ভেতরে চলছে অনুষ্ঠান। দর্শকবিহীন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাপানের সম্র্রাট নারিহিতো, আইওসির সভাপতি থমাস বাক, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, প্রধান অতিথি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্ত্রী ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন উপস্থিত ছিলেন।