গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৩ হাজার ৭৬৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এটি একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত। এই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরও ২২০ জন।
সোমবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৯৫৭ জন। আর মোট মৃত্যু হয়েছে ১৬ হাজার ৬৩৯ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, উল্লিখিত সময়ে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন সাত হাজার ২০ জন। আর মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা আট লাখ ৮১ হাজার ৫২১ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৪৪ হাজার ৬৭ জনের। শনাক্তের হার ৩১.২৪। দেশে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭০ লাখ ১৫ হাজার ২৩৪টি। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
মারা যাওয়া ২২০ জনের মধ্যে পুরুষ ১৪২ জন, নারী ৭৮ জন। তাদের মধ্যে ১৩ জন বাসায় ও বাকি ২০৭ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
মৃতদের বয়সভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১২১ জনেরই বয়স ৬০ বছরের বেশি। ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী মারা গেছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৬ জন, তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৬ জন মারা গেছেন ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী। এছাড়া ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ১৭ জন, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী নয়জন এবং ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী একজন।
গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬৪ জন মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে খুলনা বিভাগে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩৭ জন চট্টগ্রাম বিভাগে ও চতুর্থ সর্বোচ্চ ২৩ জন মারা গেছেন রাজশাহী বিভাগে। এছাড়া রংপুর বিভাগে ১৮ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩ জন, সিলেট বিভাগে ছয়জন ও বরিশাল বিভাগে চারজন মারা গেছেন।
দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। কয়েক মাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকার পর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। চলতি বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। তখন শনাক্তের হারও ৫ শতাংশের নিচে নেমেছিল। তবে গত মার্চ মাস থেকে মৃত্যু ও শনাক্ত আবার বাড়তে থাকে। জুলাই মাসে দৈনিক শনাক্তের হার ৩০ শতাংশের উপরে আছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। সে হিসেবে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই বলা যায়।
বিশেষজ্ঞরা এটাকে বাংলাদেশে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বলছেন। করোনা সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করায় প্রথমে ২১ এপ্রিল ও পরে তা বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিধিনিষেধ জারি করেছিল সরকার। এরপর সেটি ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ১৬ জুলাই পর্যন্ত করা হয়েছে। এর মধ্যেই আবার ১ জুলাই থেকে এক সপ্তাহের জন্য কঠোর লকডাউনের জারি করেছে সরকার, যা আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়। বুধবার এই বিধিনিষেধ শেষ হওয়ার পর ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে তা কিছুটা শিথিল হবে বলে আভাস পাওয়া গেছে।