করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে সাত দিনের কঠোর লকডাউন। এই লকডাউন থাকবে আগামী ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত।
এ সময়ে জরুরি সেবা দেয়া দফতর-সংস্থা ছাড়া সরকারি-বেসররকারি অফিস, যন্ত্রচালিত যানবাহন, শপিংমল দোকানপাট বন্ধ থাকবে। খোলা থাকবে শিল্প-কারখানা। জনসমাবেশ হয় এমন কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না এই সময়ে। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে মাঠে আছে সেনাবাহিনী। কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে বুধবার (৩০ জুন) মন্ত্রিপরিষদি বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
লকডাউনের প্রথম সকালে দেখা গেছে, প্রধান সড়কগুলোতে কিছু পণ্যবাহী ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্স, পোশাক প্রস্তুতকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্মী আনা-নেওয়ার গাড়ি, বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকদের গাড়ি ও সংবাদমাধ্যমের গাড়ি চলতে দেখা গেছে। তবে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে পুলিশের কঠোর ভূমিকা লক্ষ্য করা গেছে। তারা প্রায় প্রত্যেকটি গাড়ি চেক করার চেষ্টা করছেন। এছাড়া রাস্তায় মানুষের আনাগোনা খুব একটা দেখা যায়নি।
যা যা বন্ধ
- সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
- সড়ক, রেল ও নৌপথে গণপরিবহন (অভ্যন্তরীণ বিমানসহ) ও সব ধরনের যন্ত্রচালিত যানবাহন বন্ধ থাকবে।
- শপিং মল, মার্কেটসহ সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে।
- সব পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
- জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক (বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান তথা ওয়ালিমা, জন্মদিন, পিকনিক পার্টি ইত্যাদি), রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
যা যা খোলা
- আইন-শৃঙ্খলা ও জরুরি পরিসেবা, যেমন: কৃষি পণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহণ, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, রাজস্ব আদায় সম্পর্কিত কার্যক্রম, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস বা জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবা, ব্যাংক, ফার্মেসি ও ফার্মাসিটিক্যালসসহ অনান্য জরুরি বা অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোর কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে যাতায়াত করতে পারবে।
- পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক লরি বা কাভার্ড ভ্যান বা কার্গো ভেসেল এ নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে।
- বন্দরগুলো (বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থল) এবং তৎসংশ্লিষ্ট অফিসগুলো এ নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে।
- শিল্প-কারখানা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে।
- কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনা-বিক্রি করা যাবে। সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠন বা বাজার কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
- অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনা, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন বা সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে,
- টিকা কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে টিকা গ্রহণের জন্য যাতায়াত করা যাবে,
- খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার বিক্রি (অনলাইন বা টেকওয়ে) করতে পারবে,
- আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু থাকবে এবং বিদেশগামী যাত্রীরা তাদের আন্তর্জাতিক ভ্রমণের টিকিট প্রদর্শন করে গাড়ি ব্যবহারপূর্বক যাতায়াত করতে পারবে।