জরিমানা বাড়িয়ে এবার কালো টাকা সাদা করা বা অপ্রদর্শিত অর্থ প্রদর্শনের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। তবে আগের মতো ১০ শতাংশ হারে কর দিয়ে নয়, ২৫ শতাংশ কর এবং ওই করের ওপর ৫ শতাংশ জরিমানা দিয়ে নগদ টাকা, ব্যাংকে রাখা টাকা, সঞ্চয়পত্র কিনেও টাকা সাদা করা যাবে। একইভাবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে চাইলে একই হারে কর ও জরিমানা দিয়ে কালোটাকা সাদা করা যাবে।
১০ শতাংশ কর দিয়ে কালোটাকায় নতুন শিল্পকারখানা করা যাবে। জমি ও ফ্ল্যাট কিনে এলাকা ও আয়তনভেদে নির্ধারিত কর দিয়ে কালোটাকা সাদা করা যাবে। আগামী ১ জুলাই থেকে ২০২২ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত পুরো অর্থবছর জুড়ে এ সুযোগ পাওয়া যাবে। অন্যদিকে অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে ১০ শতাংশ কর দিয়ে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কালোটাকা সাদা করার বিদ্যমান সুযোগটিও অব্যাহত রাখা হয়েছে। কালোটাকা সাদা করলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ছাড়া অন্য কোনো সংস্থা এ নিয়ে প্রশ্ন করবে না।
মঙ্গলবার (২৯ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২১ সালের অর্থবিল পাসের সময় কিছু ধারা সংশোধন করে পাস করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার সময়ে দেওয়া নগদ টাকা, ব্যাংকে রাখা টাকা ও এফডিআর, সঞ্চয়পত্র কিনে ১০ শতাংশ হারে কর দিয়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগটি ৩০ জুন, অর্থাৎ আজ শেষ হচ্ছে। একইসঙ্গে শেয়ারবাজারেও একই হারে কর দিয়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ আজ শেষ হচ্ছে। উল্লেখ্য এর আগে গত ৩ জুন প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারসহ বেশ কয়েকটি খাতে কালো টাকা বা অপ্রদর্শিত অর্থ নিয়ে কিছু বলা হয়নি। পাস হওয়া অর্থবিলে আগামী অর্থবছরে পুঁজিবাজারে প্রশ্নাতীতভাবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হলো।
পাশ হওয়া অর্থবিলে দেখা যায়, ২৫ শতাংশ কর ও করের ওপর ৫ শতাংশ জরিমানা, অর্থাৎ সব মিলিয়ে ২৬ দশমিক ২৫ শতাংশ কর দিয়ে কালোটাকা সাদা করতে হবে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত শেয়ার, বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটসহ পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইন্সট্রুমেন্টে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ কর এবং মোট করের ওপর ৫ শতাংশ জরিমানা গুণতে হবে। তবে ওই টাকায় কেনা শেয়ার এক বছরের মধ্যে বিক্রি করলে ১০ শতাংশ হারে জরিমানা দিতে হবে।
এনবিআরের কর্মকর্তারা জানান, এ ধরণের সুযোগের বাইরেও আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, অপ্রদর্শিত অর্থ প্রদর্শনের সুযোগ থাকছে। এক্ষেত্রে প্রযোজ্য হারে আয়কর ও জরিমানা দিয়ে যে কেউ অর্থ প্রদর্শনের সুযোগ পাবেন তবে অর্থের উৎস জানাতে হবে। জাতীয় সংসদে মঙ্গলবার কতিপয় সংশোধনীসহ অর্থ বিল-২০২১ পাসের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে সংসদ সদস্যদের কণ্ঠভোটে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য এই বিল পাস হয়। অর্থবিল পাসের সময় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।