নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভারতের নতুন তথ্য প্রযুক্তি (আইটি) আইনের শর্ত মেনে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারায় আইটি আইনের সুরক্ষাকবচ হারালো টুইটার। এর ফলে এখন থেকে টুইটার ব্যবহারকারীর পোস্ট বা কমেন্টের দায়ভার নিতে হবে খোদ টুইটারকে। প্রয়োজনে টুইটারের কোনো ব্যবহারকারীর করা পোস্ট বা মন্তব্যের জন্য মামলা করা যাবে টুইটারের বিরুদ্ধেই।
সম্প্রতি টুইটারের বিরুদ্ধে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় আইন এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে ভারতের গাজিয়াবাদ জেলায় এক বৃদ্ধকে নির্যাতনের একটি ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার ঘটনায় টুইটারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে স্থানীয় পুলিশ। গুরুগ্রামে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে অভিযানও চালিয়েছে পুলিশ।
জানা যায়, সম্প্রতি দেশটিতে কার্যকর হওয়া তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৭৯ ধারা মোতাবেক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোকে ফৌজদারি মামলা থেকে রেহাই দেওয়া হয়। এরজন্য কিছু শর্ত মানতে হবে প্ল্যাটফর্মগুলোকে যেমন এসব প্ল্যাটফর্মে থাকা ব্যবহারকারীদের তথ্য দিতে হবে সরকারকে, ভারতে এমন প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় কার্যালয় খুলে সেগুলোতে কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে ইত্যাদি।
বড় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোকে তাদের প্ল্যাটফর্মে কী কী বিষয়বস্তু পোস্ট করা হচ্ছে সেই বিষয়ে দায়বদ্ধ করে তোলার জন্যই ভারত সরকার এই নতুন আইটি আইন চালু করেছে। এই নিয়ম অনুসারে, ৫০ লাখের বেশি ব্যবহারকারী থাকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে ভারতে একজন অভিযোগ গ্রহণ করার কর্মকর্তা, একজন নোডাল অফিসার এবং একটি চিফ কমপ্লায়েন্স অফিসার নিয়োগ করতে হবে এবং নিয়োগকৃতদের ভারতের বাসিন্দা হতে হবে।
গেল ২৬ মে থেকে আইন কার্যকর হলেও করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে চলতি জুনের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এসব আইনের ধারা পূরণ করতে সময় বেঁধে দেওয়া হয় প্ল্যাটফর্মগুলোকে। তবে ‘ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ’ এর অজুহাত দেখিয়ে এই আইন মেনে নেয়নি টুইটার। তবে একজন চিফ কমপ্লায়েন্স অফিসার নিয়োগের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলার ঘোষণা দেয় প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু তার আগেই আইনের এই রক্ষাকবচ হারালো তারা।
এবিষয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ বলেন, এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নতুন আইটি আইন মেনে চলতে টুইটারকে অনেক সুযোগ দেওয়া হয়েছে। স্পষ্ট জানানো হয়েছিল যে, আইনের নিয়ম মানতে ব্যর্থ হলে ফৌজদারি দায় থেকে অব্যাহতি পাওয়ার রক্ষাকবচ হারাবে টুইটার। টুইটারও আশ্বাস দিয়েছিল তবে শেষ পর্যন্ত সেসব শর্ত মেনে নিতে না পারায় কেন্দ্রীয় সরকারকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।