একজন গৃহহীন মানুষ আশ্রয় পেলে তার জীবনটাই বদলে যায় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৫৩ হাজার ৩৪০টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে বিনা মূল্যের ঘর দেয়া কর্মসূচির উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। রবিবার (২০ জুন ) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সে সময় এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা মানুষ যার ঘর নাই বাড়ি নাই, ফুটপাতে পড়ে থাকতে হয়। রেললাইনের পাশে বা বিভিন্ন জায়গায় ঝড়-বৃষ্টিপাত মাথায় নিয়ে জীবন যাপন করতে হয়। যখন সে একটা ঘর পায় তার জীবনটাই বদলে যায়। মানুষের জন্য কাজ এটাই তো সবচেয়ে বড় কথা।’
মুজিববর্ষে দ্বিতীয় দফায় ৫৩ হাজার ৩৪০ ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে মাথা গোঁজার ঠাঁই দিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা, ‘মুজিববর্ষে কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না’ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর আওতায় এ ঘরগুলো পাচ্ছেন গৃহহীন দরিদ্র পরিবারগুলো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর, যে আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল সে আদর্শই সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। যারা ক্ষমতায় এসেছিল, ক্ষমতা তাদের কাছে ভোগের বস্তু ছিল। জনগণের কল্যাণে তারা কাজ করতে আসেনি। কিন্তু আমি জানি, বড় সন্তান হিসেবে তার সাথে থেকে থেকে দেশের মানুষের জন্য তার অনুভূতি এবং তার স্বপ্ন। এবং তিনি কি করতে চাইতেন? প্রত্যেকটা গ্রামকে সুন্দরভাবে সাজাতে চেয়েছেন। কিন্তু সে সুযোগটা তাকে আর দেয়া হয়নি।’
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘সেই স্বপ্নটা বুকে নিয়ে যখন ফিরে আসি তখন একটিই লক্ষ্য ছিল, এই দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর যে স্বপ্ন আমার বাবা দেখেছেন তা পূরণ করতে হবে। সেই সাথে আমাদের প্রতিজ্ঞা ছিল, যখনই আমরা সরকার গঠন করব, দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো এবং মৌলিক চাগিদা পূরণ করার জন্য যা যা করা দরকার তা আমরা করব।’
এর আগে মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ২৩ জানুয়ারি ৬৬ হাজার গৃহহীন পরিবারকে ঘর হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যে ঘরগুলো দেয়া হচ্ছে সেগুলোর প্রত্যেকটিতে রয়েছে দুটি করে শয়নকক্ষ, একটি রান্নাঘর, একটি টয়লেট ও একটি লম্বা বারান্দা। ঘরের নকশা পছন্দ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই।
প্রতিটি বাড়ির নির্মাণে খরচ হচ্ছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে এ প্রকল্পে খরচ হয়েছে ২ হাজার ২৩৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। দেশের ইতিহাসে এর আগে এত মানুষকে এক দিনে সরকারি ঘর হস্তান্তর করা হয়নি।
সরকারের পক্ষে থেকে দাবি করা হয়েছে, বিশ্বেই একদিনে এর আগে এত বেশি ঘর বিনামূল্যে হস্তান্তর করা হয়নি কখনো।