আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে থাকার বিষয়টি স্বীকার করলেও কেন নিখোঁজ ছিলেন সে ব্যাপারে মুখ খুলছেন না রংপুরের ইসলামি বক্তা আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনান। তার সঙ্গীরাও এসব ব্যাপারে নীরব রয়েছেন। তবে গাইবান্ধায় যে বন্ধুর বাড়িতে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন বলে শুক্রবার পুলিশ জানিয়েছে, সেই সিয়ামের মা গতকাল শনিবার বলেছেন, ‘ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য সে আমাদের বাড়িতে উঠেছে বলে জানিয়েছে।’
রংপুরে ওয়াজ মাহফিল শেষে ঢাকার বাসায় ফেরার পথে গত ১০ জুন আবু ত্ব-হা ও তার তিন সঙ্গী নিখোঁজ হন বলে অভিযোগ ওঠে। এক সপ্তাহ পর শুক্রবার ভোরে তারা রংপুরে ফেরেন। পরে ডিবি অফিসে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে ত্ব-হা ও তার দুই সঙ্গী আদালতে জবানবন্দি দেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে আদালতের মাধ্যমে তাদের নিজ নিজ পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়। রংপুর স্টাফ রিপোর্টার জানান, আদালত থেকে বাড়ি ফেরার সময় নীরব ছিলেন আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনান। মুখ খুলেননি তার সঙ্গী আব্দুল মুকিত ও গাড়িচালক আমির উদ্দিন ফয়েজও।
এ সময় তারা সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নেরই জবাব দেননি। কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রশিদ জানান, আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তারা স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন। তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এদিকে আবু ত্ব-হাকে সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় নিরাপদে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তার মামা আমিনুল ইসলাম। মা আজেদা বেগম বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে আমার ছেলে জীবিত ফিরে এসেছে, এজন্য শুকরিয়া আদায় করছি। আর যেন কোনো বিপদ-আপদ না হয়। আমরা খুশি, সরকারকে ধন্যবাদ।’
গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালি ইউনিয়নের পশ্চিম পিয়ারাপুর গ্রামে তার বন্ধু সিয়াম ইবনে শরিফের বাড়িতে সাত দিন ছিলেন বলে জানা গেছে। এসময় তার সঙ্গে আরো তিন জন আবদুল মুহিত, ফিরোজ আলম ও আমির উদ্দিনও ছিলেন। সিয়াম ইবনে শরিফ ঐ গ্রামের মৃত শরিফ নেওয়াজ খানের ছেলে। তিনি একটি মোবাইল কোম্পানিতে চাকরি করার সুবাদে রংপুর নগরীতে বসবাস করেন।
শনিবার দুপুরে পশ্চিম পিয়ারাপুর গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাড়িতে একাই থাকেন সিয়ামের মা নিশাত নাহার। ত্ব-হা কেন এসেছিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার বাড়িতে এসেই আবু ত্ব-হা আমাকে বলে, আন্টি আমাকে কেউ হয়তো ফলো করছে। এ কারণে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আপনার এখানে কয়েক দিন থাকব। তখন আমি বললাম, থাকো অসুবিধা কি। এর আগেও সে একাধিকবার আমার বাড়িতে এসেছে। তিনি বলেন, এর বাইরে আমি কিছু জানি না।