সম্প্রতি মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও বাড়তে শুরু করেছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনও মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে বেশ অনাগ্রহ। শুক্রবার (১৮ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন জনবহুল এলাকা, ফুটপাত, মার্কেট ও বিপণীবিতান ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
সরেজমিনে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি, এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকার ফুটপাত থেকে শুরু করে মার্কেটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতা কেউই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব। অধিকাংশের মুখেই ছিল না মাস্ক। মার্কেটগুলোর প্রবেশমুখে নেই জীবাণুনাশক বা হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থাও। দুপুর নাগাদ এসব এলাকায় যান চলাচল ও মানুষের উপস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও বিকেলের পর মানুষের প্রচণ্ড উপস্থিতিতে জনারণ্যে পরিণত হয় নিউমার্কেট। ফলে পুরো এলাকা জুড়েই সৃষ্টি হয় প্রচণ্ড যানজট।
তবে ক্রেতাদের এমন উপস্থিতিতে বেশ খুশি ব্যবসায়ীরা। গাউছিয়া মার্কেটের কাপড় বিক্রেতা আব্বাস উদ্দিন বলেন, অনেকদিন পর মানুষের এমন উপস্থিতি দেখছি। ভালো বেচাকেনা হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব হচ্ছে না।
মাস্ক পরিধান না করেই ক্রেতাদের হাঁকডাকে ব্যস্ত ফুটপাতের কাপড় বিক্রেতা আব্বাস উদ্দিন। তিনি বললেন, মাস্ক মুখে দিয়ে বেশি জোরে কথা বলা যায় না। তাছাড়া বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকাও যায় না। আমাদের সব সময় কথা বলতে হয়। মাস্ক মুখে দিলে ক্রেতারা কথা বোঝে না। তাই বাধ্য হয়েই খুলে রেখেছি।
পরিবার নিয়ে কেনাকাটা করতে আসা চাকরিজীবী আব্দুল কাইয়ুম বলেন, এত ভিড় হবে জানলে আসতাম না। এখানে কোনোভাবেই স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা সম্ভব নয়। যে হারে করোনার প্রকোপ আবার বাড়ছে, আমাদের সবারই আগেভাগে সতর্ক হওয়া উচিত। বিশেষ করে মাঠ প্রশাসনের দায়িত্বে যারা আছেন, তারা যদি কঠোর হন, তবে এটি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। সাধারণ মানুষের মধ্যে সতর্কতা নেই বললেই চলে।
ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেচাকেনা করার জন্য সতর্ক করা হচ্ছে জানিয়ে বৃহত্তর এলিফ্যান্ট রোড ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সহ-সভাপতি এবং আল্পনা প্লাজার সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বিল্লু বলেন, এখানকার দোকানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। দোকান মালিক এবং সংশ্লিষ্ট যারা রয়েছেন, সবাইকে আমরা বলে দিয়েছি যেন সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করেন। এছাড়া মার্কেটে আসা ক্রেতারা যেন কোনোভাবেই মাস্ক পরিধান করা ছাড়া ঘোরাফেরা না করেন, সে ব্যাপারে নজর রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনে আমরা নজরদারি আরও বাড়াব।