রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদলের নেতা কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দলটির ২০ থেকে ২৫ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন এবং ৮ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে অভিযোগ সংগঠনটির।
ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, সকালে ময়মনসিংহে ছাত্রদলের বিভাগীয় আলোচনা সভাকে কেন্দ্র করে পুলিশ অতর্কিত হামলায় চালায়। এর প্রতিবাদে ঢাকায় মিছিল বের করলে সেখানেও পুলিশ হামলা করে। এ ঘটনায় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ সংগঠনের বেশ কয়েকজন আহত হন।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের উদ্যোগে তাৎক্ষণিক ঝটিকা মিছিল বের করতে সংগঠনটির নেতা কর্মীরা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। এসময় পুলিশ মিছিল বের করতে বাধা দেন। পরে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করলে লাঠিচার্জ করে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এসময় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেই ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের বাধা দেয় পুলিশ। পরে ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে মিছিল করতে গেলে সংঘর্ষ ঘটে। নেতা-কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।
জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবন বলেন, ‘পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদলের সংঘর্ষে সংগঠনের ২০-২৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আশরাফুল আলম ফকির লিংকন বলেন, নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে আমরা দুই শতাধিক নেতাকর্মী প্রতিবাদ মিছিল বের করলে পুলিশ পেছন থেকে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলার প্রতিবাদে পরে আবার আমরা মিছিল করেছি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিছিল পুলিশ বাধা দিলে ছাত্রদলের নেতাকর্মী অপ্রস্তুত অবস্থায় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এবং আশপাশের গলিতে অবস্থান নেয়। পরে তারা আবার হাতে কয়েকটি লাঠি নিয়ে কার্যালয়ের সামনে মিছিল করে। তখন পুলিশ আর বাধা দেয়নি। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের সহসভাপতি হাফিজুর রহমান হাফিজ, মামুন হাসান, ছাত্রদল ঢাকা মহানগর পূর্বের সভাপতি খন্দকার এনামুল হক এনাম, কেন্দ্রীয় নেতা আমিনুর রহমান আমিন, সাইফ মাহমুদ জুয়েলসহ দুই শতাধিক নেতাকর্মী।
বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় দপ্তরের চলতি দায়িত্বে থাকা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ছাত্রদলের মিছিলে পুলিশ ধাওয়া করার পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘিরে রেখেছে পুলিশ। যে কেউ বের হলেই তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, আজ হঠাৎ করে ছাত্রদলের কর্মীরা পল্টন এলাকায় রাস্তায় নেমে ভাঙচুর শুরু করে। তারা অতর্কিতভাবে পুলিশ বক্সে হামলা এবং গাড়িতে ভাঙচুর করে। এছাড়া তারা রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে। পরে পুলিশ জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ছাত্রদলের কর্মীদের রাস্তা থেকে উঠিয়ে দেয়। পুলিশ রাস্তায় নামার পর তারা নিজেরাই রাস্তা থেকে সরে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ৮ জন নয় আমরা ৬ জনকে আটক করেছি। যাচাই-বাছাই করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।