গত দুই মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল জেনারেল আসিম মুনির। এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর রাষ্ট্রটির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা বলতে গেলে অনেকটাই প্রকাশ্য। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এক ধরনের সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে ভারতের। এ অবস্থায় ফ্লোরিডায় এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ভারতকে নিয়ে কড়া বক্তব্য রেখেছেন পাকিস্তান সেনাপ্রধান, যেখানে অস্তিত্বের সংকটে পড়লে ভয়ংকর পারমাণবিক যুদ্ধের হুঁশিয়ারিও দিতে দেখা গেছে তাকে।
সোমবার (১১ আগস্ট) পৃথক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম দ্য ডন ও ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিন্ধুতে ভারত কোনও বাঁধ নির্মাণ করলে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে তা ধ্বংস করে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন আসিম মুনির।
রোববার (১০ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার টাম্পায় পাকিস্তান-আমেরিকান কমিউনিটির এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। সেখানে তিনি সিন্ধু নদীর পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে কথা বলেন।
পাকিস্তান সেনাপ্রধান বলেন, গত এপ্রিলে পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর নয়াদিল্লির সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত রাখায় পাকিস্তানের ২৫ কোটি মানুষ অনাহারের ঝুঁকিতে আছে। আমরা ভারতের বাঁধ নির্মাণের জন্য অপেক্ষা করব এবং যখন তারা বাঁধ বানাবে, তখন আমরা ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তা ধ্বংস করে দেব। সিন্ধু নদীর পানি ভারতীয়দের পারিবারিক সম্পত্তি নয়। আমাদের মিসাইলের কোনো অভাব নেই।
ওই অনুষ্ঠানে আসিম মুনির আরও বলেন, ভবিষ্যতে পাকিস্তান যদি অস্তিত্বের হুমকির মুখোমুখি হয়, তাহলে পুরো বিশ্বের অর্ধেক ধসিয়ে দেবো। আমরা পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। যদি আমরা মনে করি আমরা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছি, তাহলে আমরা আমাদের সঙ্গে বিশ্বের অর্ধেককে ধসিয়ে নিয়ে যাব।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২২ এপ্রিল ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। ২৬ জন পর্যটক নিহত হন ওই হামলায়। এ ঘটনায় পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। এ নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনার এক পর্যায়ে ১৯৬০ সালে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে হওয়া সিন্ধু নদের পানি চুক্তি স্থগিত রাখার কথা জানায় নয়াদিল্লি।
পরবর্তীতে ৬ মে দিবাগত মধ্যরাতে পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে আকস্মিক বিমান হামলা চালায় ভারত। এই অভিযানের নাম তারা দেয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। ভারতের হামলার পর ‘অপারেশস বুনিয়ানুন মারসুস’ নামে পাল্টা সামরিক অভিযান শুরু করে পাকিস্তানি বাহিনী। এতে উভয় পক্ষই যুদ্ধবিমানের পাশাপাশি ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে এবং সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়। টানা কয়েকদিনের সংঘাতের পর ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় চিরবৈরি দুই প্রতিবেশী।