২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সময় আদায় হয়েছে মোট ৩ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা, যা সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৯২ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা বা ১৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ কম।
মূল বাজেটে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা, যা পরে সংশোধন করে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়।
তবে আশার আলো হিসেবে, আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় রাজস্ব আদায় ২ দশমিক ২৩ শতাংশ বেড়েছে।
অর্থবছরের শেষ মাস জুনে সাধারণত রাজস্ব আদায়ের হার বেশি থাকে। কিন্তু এবার সেই ধারা ব্যাহত হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুনে আদায় হয়েছে প্রায় ৪৩ হাজার ৯২ কোটি টাকা, যা আগের বছরের জুনের তুলনায় ৯ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা কম।
এনবিআর কর্মকর্তারা জানান, এনবিআর ভেঙে দুটি বিভাগ করার ঘোষণার পর আন্দোলনের কারণে প্রায় দেড় মাস আমদানি-রপ্তানিসহ নানা কার্যক্রম ব্যাহত হয়, যা রাজস্ব আদায়ে প্রভাব ফেলে। আন্দোলনটি ১২ মে থেকে শুরু হয়ে চলে ২৯ মে পর্যন্ত।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আয়কর ও ভ্রমণ কর খাতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৭১ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা, কিন্তু আদায় হয়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার ৯০ কোটি, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪২ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা কম।
স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট আদায় হয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২৯ হাজার ৯০৯ কোটি টাকা কম।
কাস্টমস (শুল্ক) খাতে আদায় হয়েছে ১ লাখ ১৯৮ কোটি টাকা, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৫১০ কোটি টাকা। এ খাতেও ঘাটতি ২০ হাজার ৩১২ কোটি টাকা।
যদিও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি, তবু আগের অর্থবছরের তুলনায় আয়কর, ভ্যাট ও শুল্কে প্রবৃদ্ধি হয়েছে যথাক্রমে ২ দশমিক ৮৭, ৩ দশমিক ০১ এবং শূন্য দশমিক ৩৩ শতাংশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘জুন মাসে সাধারণত প্রতিদিন ২ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আসে। কিন্তু আন্দোলনের কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে চূড়ান্ত হিসাব এলে রাজস্ব কিছুটা বাড়তে পারে।’