পাকিস্তানের করাচির একটি আবাসন থেকে অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের পচাগলা মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তোলপাড় দেশটির শোবিজ অঙ্গন। শুরুতে পুলিশের ধারণা ছিল, ৩২ বছর বয়সী এই অভিনেত্রীর মৃত্যু হয়েছে দুই সপ্তাহ আগে। পরে উঠে আসে আরও ভয়াবহ চিত্র! জানা যায়, প্রায় ৬ মাস আগে মারা গিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় মরদেহে ধরে পোকা, পচে গিয়েছিল মাংস।
অভিনেত্রীর মরদেহ ৮ জুলাই করাচির ডিফেন্স ফেজ ৬-এর ইত্তেহাদ কমার্শিয়াল এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়। তিনি সেখানে সাত বছর ধরে একা বসবাস করছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, হুমায়রার অ্যাপার্টমেন্টের পাশের ফ্ল্যাট দীর্ঘদিন ধরে খালি ছিল। ফলে কারও সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল না,বা কেউ সন্দেহ করার মতো কোনো গন্ধও অনুভব করেনি।
ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল সৈয়দ আসাদ রেজা বলেন, ফ্ল্যাটের বাথরুমের জানালা খোলা থাকায় মরদেহের গন্ধ বাইরে বের হতে পেরেছে। ফলে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েনি বিল্ডিংয়ের ভিতরে। হুমায়রা নিয়মিত করাচি ও লাহোর যাতায়াত করতেন। এতে অনেকেই ভেবেছেন তিনি হয়তো লাহোরে গেছেন। তাই তার দীর্ঘ অনুপস্থিতি নিয়ে কেউ চিন্তা করেনি। মৃত্যুর পর মাত্র একজন বন্ধু অক্টোবর ৭-এর পরে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। বিল্ডিংয়ের নিরাপত্তারক্ষীও মৃত্যুর আনুমানিক তিন দিন পর তাকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু কোনো সাড়া পাননি।
পুলিশ সার্জন সুমাইয়া সৈয়দ জানান, মৃত্যু আদৌ স্বাভাবিক, দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা, না কি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড- তা জানতে এখন তদন্ত চলছে। এজন্য সিন্ধু পুলিশ একটি ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন এসপি ক্লিফটন ইমরান জাগিরানি। প্রতিদিন এই টিমের অগ্রগতি রিপোর্ট এসএসপি সাউথকে জানাতে বলা হয়েছে।
এদিকে, এত দীর্ঘ সময় ধরে হুমাইরার খোঁজ কেউ নেয়নি কেন। এমনকি অভিনেত্রীর সঙ্গে তার পরিবারেরও দূরত্ব ছিল বলে জানা গেছে। ফলে বিষয়টি ঘিরে দানা বাঁধে নানা সন্দেহ।
এই যখন পরিস্থিতি, দুর এ শেহওয়া নামে হুমাইরার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু প্রকাশ্যে এনেছেন অভিনেত্রীর পাঠানো একটি শেষ ভয়েস নোট, যা ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিকমাধ্যমে।
সেখানে হুমাইরাকে বলতে শোনায়, আমি দুঃখিত, আমি একটু ব্যস্ত ছিলাম, এখানে ওখানে ঘুরছিলাম। খুব খুশি হয়েছি শুনে যে তুমি মক্কায় আছো। আমার জন্য অনেক দোয়া করো প্লিজ। তোমার এই কিউটি বন্ধু কিংবা বোনের জন্য মন থেকে অনেক দোয়া করবে। আমার ক্যারিয়ারের জন্যও দোয়া করবে।