ইরানের চারশো কেজিরও বেশি ইউরেনিয়াম কোথায় আছে জানে না জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ বিষয়ক সংস্থা আইএইএ। এই তথ্য স্বীকার করেছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক। আর ইরানের সাথে কোনো আলোচনা হচ্ছে না বলে সোজা জানিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এদিকে ইরানের বিচার বিভাগের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ইসরাইলের সঙ্গে টানা ১২ দিনের সংঘাতে দেশটিতে মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৩৫ জনে। ইরানের পরমাণু স্থাপনায় ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর কোন পথে রয়েছে তেহরাণের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ এ নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
এরইমধ্যেই জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ বিষয়ক সংস্থা আইএইএ স্বীকার করেছে ইরানের ৪০০ কেজিরও বেশি ইউরেনিয়াম কোথায় আছে তারা তা জানে না। কানাডিয়ান টেলিভিশন চ্যানেল সিবিএসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আইএইএ মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি ইরান প্রসঙ্গে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা জানিনা ইরানের ইউরেনিয়াম কোথায় আছে। ইসরাইল ইরান সংঘাতের সময় অন্তত ৪০০ কেজি ইউরেনিয়াম ছিল ইরানের এবং সেসব ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতার মাত্রা ছিলো ৬০ শতাংশ। পারমাণু বোমা তৈরির জন্য কমপক্ষে ৯০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়ামের প্রয়োজন হয়। আর ৬০ শতাংশকে ৯০ শতাংশ উন্নীত করা কঠিন কোনো ব্যাপার না।
এদিকে ইরানকে কোনো কিছু দিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশটির সঙ্গে কোনো আলোচনাও করছেন না বলেও জানিয়েছেন তিনি। ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে আবারো ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো পুরোপুরি ধ্বংসের দাবি জানিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
অন্যদিকে তেহরানের বিরুদ্ধে আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য প্রকৃতপক্ষে দুই দেশের মধ্যে কোনো সমঝোতার উদ্দেশ্যে নয়। বরং এটি একটি কৌশলগত প্রচারণার অংশ বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই।
তিনি বলেন, ট্রাম্পের এই বিবৃতি সংলাপ বা সমস্যা সমাধানের পক্ষে একটি গুরুতর অভিব্যক্তি হিসেবে দেখার চেয়ে মনস্তাত্ত্বিক ও মিডিয়া গেমের প্রেক্ষাপটে বেশি দেখা উচিত। ট্রাম্পের ভাষা এবং আচরণ ইঙ্গিত দেয়, ওয়াশিংটন এখনো তেহরানের ওপর চাপ প্রয়োগের কৌশল থেকে সরে আসার পরিকল্পনা করছে না।
এছাড়া জুন মাসে ইসরাইলের সঙ্গে সংঘাতে মোট নিহতের সংখ্যা নতুন করে প্রকাশ করেছে ইরান। দেশটির বিচার বিভাগের নতুন পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১২ দিনে ইরানে নিহত হয়েছেন ৯৩৫ জন; নিহতদের মধ্যে ৩৮ জন শিশু এবং ১৩২ জন নারী আছেন।