বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার অভিযোগ আমলে নিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় পলাতক বেরোবি’র সাবেক ভিসি হাসিবুরসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। অন্যদিকে কারাগারে থাকা চার আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে এ আদেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
এর আগে, সোমবার সকালে এই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়। অভিযোগে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টরসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে আবু সাঈদ হত্যার সঙ্গে তৎকালীন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারসহ ৩০ জনের সম্পৃক্ততা মিলেছে বলে জানা গেছে।
এদিন সকালে প্রসিকিউশন ১০৯ পৃষ্ঠার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পত্র দাখিলের পর দুপুরে শুনানি হয়।
শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জুলাই আন্দোলনে পটভূমি, নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার নির্দেশনা, এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে তার সরকারের মন্ত্রী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের ভূমিকার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
একইসঙ্গে গেলো বছরের ১৬ জুলাই রংপুরে কীভাবে নিরস্ত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করা হয় এবং এই হত্যায় ৩০ আসামির কী সম্পৃক্ততা ছিলো তাও তুলে ধরেন তিনি।
এসময় অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি এবং পলাতক ২৬ আসামিকে গ্রেপ্তারের আবেদন জানান চিফ প্রসিকিউটর।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন গেলো বছরের ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ। ২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদের পুলিশ কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদেই সোচ্চার হন বহু মানুষ, যাতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।