গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী দিবস। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘নির্যাতন থেকে প্রতিরোধ: স্মৃতি, ন্যায়বিচার ও প্রতিবাদের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে দলটির মানবাধিকারবিষয়ক সেল। সেখানে এনসিপির নেতারা এসব কথা বলেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে নির্যাতিত ব্যক্তি ও পরিবারের ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। যে পরিবার ও মানুষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের ক্ষতিপূরণ হচ্ছে তাদের সামাজিকভাবে পুনর্বাসন করা, সুরক্ষা দেওয়া এবং এ রকম ঘটনা যাতে আর কোনো দিন না ঘটে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্কিত ও নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত সংস্কার কমিশনগুলোর প্রতিবেদন নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে, কিন্তু জনগুরুত্বপূর্ণ (যেমন পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন) অনেক বিষয় নিয়ে তেমন আলোচনা হচ্ছে না।
আওয়ামী লীগের আমলে শারীরিকভাবে নির্যাতিত মানুষের সংখ্যা নিরূপণ করতে না পারাকে অন্তর্বর্তী সরকারের বড় একটি ব্যর্থতা হিসেবে উল্লেখ করেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব আকরাম হুসাইন। তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আমলে নির্যাতিতদের সবাইকে স্বীকৃতি ও ক্ষতিপূরণ দিতে না পারলে নতুন বাংলাদেশ গড়া যাবে না। নির্যাতনমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা নতুন সামাজিক ও রাজনৈতিক চুক্তি লাগবে।’
আলোচনায় অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক খন্দকার রাকিব। তিনি বলেন, আগে রাজনৈতিক কর্মীরা অন্যদের ওপর নির্যাতন করতেন বা অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তি পর্যায়ে নির্যাতনের ঘটনা ঘটত। কিন্তু বিগত শাসনামলে এটাকে একটা রাষ্ট্রীয় রূপ দেওয়া হয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় নানা বাহিনী নির্যাতনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক নেতারা সরাসরি নির্যাতনের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়ে ডিসিশন (সিদ্ধান্ত) তৈরি করে তথাকথিত গোয়েন্দা বা নিজেদের সোর্স কাজে লাগিয়ে কিছু কিছু মানুষের ‘বডি প্রোফাইল’ করতেন। চিহ্নিত করার পর বাহিনীগুলো তাদের উঠিয়ে নিয়ে নানা ধরনের নির্যাতন করত।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব এস এম সাইফ মোস্তাফিজ ও যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাইফুল্লাহ হায়দার বক্তব্য দেন।