এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. মাসুদুল আলম বলেন, ‘শুক্রবার বিকেল থেকে তিনি শরীয়তপুর জেলায় নেই। কোথায় গেছেন, তা আমি জানি না।’
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আসলাম হোসাইন বলেন, ‘শুক্রবার অফিস শেষে তিনি বাসায় গিয়েছিলেন। পরে তিনি আর শরীয়তপুরে নেই। তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।’
ডিসির সরকারি মোবাইলফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে একটি ৫৭ সেকেন্ডের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিনকে এক নারীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখা যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি ওই নারীকে কোলে তুলে নিয়ে চুম্বন করছেন। ভিডিওর বিষয়ে বিতর্ক শুরু হলে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
ভুক্তভোগী নারী গণমাধ্যমকে জানান, ডিসি তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং তার দাম্পত্য জীবন নষ্ট করেন। অভিযোগে তিনি বলেন, ‘তিনি আমার স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স করিয়ে সম্পর্ক গড়েন। এখন বিয়ের কথা অস্বীকার করে আমাকে হুমকি দিচ্ছেন।’
জেলা প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বৃহস্পতিবার রাতেই ডিসি শরীয়তপুর ত্যাগ করেন বলে শুনেছি।’
প্রবাসী সাংবাদিক জাওয়াদ নির্ঝর সামাজিক মাধ্যমে ভিডিওটি প্রকাশ করেন। তিনি জানান, ‘ডিসি নিজেই এই ছবি ও ভিডিও ধারণ করেছেন। ওই নারীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরে তা অস্বীকার করেন।’
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, ‘একজন জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে এমন আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই ঘটনার মাধ্যমে জেলার সম্মান হানি হয়েছে।’
জেলা প্রশাসকের অফিস সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ২৭তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। এর আগে তিনি নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্টের পরিচালক ছিলেন।
ঘটনার এত চাঞ্চল্য সৃষ্টির পরও এখন পর্যন্ত কোনো তদন্ত কমিটি গঠিত হয়নি। তবে প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে।