সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন সংশোধনপূর্বক বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি ও সংজ্ঞা পরিবর্তনের যে অধ্যাদেশ জারি করেছেন তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। অধ্যাদেশের বেশ কিছু ধারা অস্পষ্ট হওয়ায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে যার ব্যাখ্যা প্রদান করা সরকারের দায়িত্ব।
গণফোরাম সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মোহসীন মন্টুর সভাপতিত্বে সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. মিজানুর রহমান, সভাপতি পরিষদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম আলতাফ হোসেন, সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, মেজবাহউদ্দীন, মোশতাক আহমেদ, অ্যাডভোকেট সুরাইয়া বেগম, অ্যাডভোকেট সেলিম আকবর, শাহ নুরুজ্জামান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সভায় নেতৃদ্বয় বলেন, ‘৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বহু আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ যাঁদের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হলো তাঁদের বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি প্রশ্নবিদ্ধ করার মধ্যদিয়ে সমগ্র মুক্তিযুদ্ধকেই প্রশ্নবিদ্ধ করার হীন চক্রান্ত করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অর্থই হচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধীদের উত্থানের সুযোগ করে দেওয়া।’
মহান মুক্তিযুদ্ধের মীমাংসিত বিষয়সমূহ, বীর মুক্তিযোদ্ধার খেতাব এবং মুক্তিযুদ্ধের সংজ্ঞার মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলো জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া সংশোধন বা পরিবর্তন অন্তর্বর্তী সরকারের একতিয়ার ও কর্তৃত্ব বহির্ভূত বলে মনে করে গণফোরাম। তবে একটি কমিশন গঠনপূর্বক নির্ভূল ও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে গণফোরাম সমর্থন, সহযোগিতা করবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের লক্ষ্যই হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খিত বৈষম্যহীন একটি গণতান্ত্রিক ও মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। কিন্ত একটি অশুভ শক্তি ৭১ ও ২৪ মুখোমুখি দাঁড় করানোর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিৎ হবে না সেই চক্রান্তে পা দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের আর্জনকে বাধাগ্রস্ত করা।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে, বিগত সরকারের সময় দলীয়করণের ফলে যে সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো অকার্যকর হয়ে পড়েছিল সেগুলোকে সংস্কার করে একটি অবাধ সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করা। কিন্তু সরকারের সংস্কার কার্যক্রমে দীর্ঘসূত্রিতা এবং বন্দর, করিডোর, মুক্তিযুদ্ধসহ কিছু অপ্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিতর্ক ও জনমনে সংশয় তৈরী হচ্ছেছ। যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অসন্তোষ তৈরী করবে।