করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে একাধিক ধাপে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজন করার চিন্তা করা হচ্ছে। এজন্য পর্যাপ্ত প্রশ্ন সেট প্রণয়ন করা হবে। পরিবর্তন আনা হবে পরীক্ষা কেন্দ্রেও। মহামারি নিয়ন্ত্রণে আসলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লিখিত পরীক্ষা আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)।
ডিপিই থেকে জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের আবেদন কার্যক্রম ছয় মাস আগে শেষ হলেও পরীক্ষা শুরু হয়নি। করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শুরু করতে সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ইতোমধ্যে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের কাজ শেষ করা হয়েছে। পরীক্ষার বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সঙ্গে চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছে। পরীক্ষা আয়োজনে নিয়োগ পরিচালনা কমিটি একাধিক সভা করে সব প্রস্তুতিমূলক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন কেবল পরীক্ষা শুরুর অপেক্ষা।
তারা জানান, এবার নিয়োগ পরীক্ষায় বেশকিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। নিজ বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা কেন্দ্র সচিব হতে পারবেন না। লিখিত পরীক্ষার দিন লটারি করে কেন্দ্র সচিব নির্বাচন করা হবে। এতে করে কেউ কোনো ধরনের অনিয়ম করতে পারবেন না। লিখিত পরীক্ষায় পাস করা প্রার্থীদের ভাইবা বোর্ডে পরিচয় নিশ্চিত করতে প্রবেশের আগে তার জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ধাপে ধাপে নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হবে।
এ বিষয়ে ডিপিইর মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, করোনা পরিস্থিতির ন্যূনতম উন্নতি হলেই পরীক্ষা শুরু হবে। এর প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। এজন্য টেকনিক্যাল যত কাজ রয়েছে সব শেষ করেছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় লিখিত পরীক্ষা শুরু করা সম্ভব হয়নি। তবে বর্তমানে পরীক্ষার কেন্দ্র নির্বাচনের কাজ শুরু হয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে ঝুঁকি এড়াতে ধাপে ধাপে এই পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে। কোন কোন কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হবে, কীভাবে আয়োজন করা হবে সেসব বিষয় নিয়ে নিয়োগ কমিটি কাজ করছে। সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে লিখিত পরীক্ষা আয়োজন করা হবে বলেও জানান তিনি।
ডিপিই সূত্রে জানা গেছে, এবার শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বেশকিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এজন্য বুয়েটের সঙ্গে আমাদের একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। নিরাপত্তা, সঠিক প্রার্থী নিশ্চিতকরণ, লটারির মাধ্যমে কেন্দ্র সচিব নির্ধারণ করা হবে। করোনা পরিস্থিতিতে ১৩ লাখের বেশি প্রার্থীর একসঙ্গে লিখিত পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না বলে ধাপে ধাপে পরীক্ষা নেওয়ার চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। সেজন্য ১৬ সেট প্রশ্নপত্র তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সারাদেশে ২৫ হাজার ৬৩০ জন প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক এবং ৬ হাজার ৯৪৭টি শূন্যপদে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দিতে গত বছরের ২৫ অক্টোবর সরকারি প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের অনলাইনে আবেদন শুরু হয়ে ২৪ নভেম্বর শেষ হয়। এরপর দুই ধাপে ভুল সংশোধন করার সুযোগ দেয় ডিপিই। এতে মোট ১৩ লাখ ৫ হাজার প্রার্থী আবেদন করেন।