রাশিয়াকে হুঁশিয়ারি দিয়ে নিজের প্রথম আনুষ্ঠানিক বিদেশ সফর শুরু করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ‘ক্ষতিকর কর্মকাণ্ডে’ জড়িত হলে রাশিয়াকে ‘ব্যাপক ও অর্থবহ’ পরিণাম ভুগতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার যুক্তরাজ্য পৌঁছেছেন জো বাইডেন। পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সময় যে মার্কিন মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্কে কিছুটা ভাটা পড়েছিল, সেসব দেশকে পুনরায় শক্ত মিত্রতার বাঁধনে জড়ানোর সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন বাইডেন।
যুক্তরাজ্য সফরে ‘আটলান্টিক চার্টার’ নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে আলোচনা করবেন বাইডেন। জলবায়ু পরিবর্তন ও নিরাপত্তা ইস্যুসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ১৯৪১ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল এবং তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্টের মধ্যে যে ঐকমত্য হয়েছিল, ‘আটলান্টিক চার্টার’ হবে তারই আধুনিক সংস্করণ।
এর আগে বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন তাঁর প্রথম ইউরোপ সফরের শুরুতে ইংল্যান্ডের সাফোকে মিলডেনহল রয়েল এয়ারফোর্স ঘাঁটিতে এসে পৌঁছান। সেখানে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের উদ্দেশে জো বাইডেন বলেন, ‘আমার বিমানবাহিনীর সেনা ও সৈনিক বন্ধুরা, আমরা আপনাদের কাছে ঋণী। আপনাদের অভিবাদন, আমরা আপনাদের জন্য গর্বিতI’
একইসঙ্গে বাইডেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সমালোচনা করেন। সফরের শেষ পর্যায়ে পুতিনের সঙ্গে বাইডেন জেনেভায় মিলিত হচ্ছেন। জো বাইডেন বলেন, ‘আমি স্পষ্ট জানিয়েছি, রুশ সরকার আমাদের বিরুদ্ধে ক্ষতিকর তৎপরতায় জড়ালে যুক্তরাষ্ট্র অত্যন্ত কঠোরভাবে তার জবাব দেবে।’ বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে মিত্রদের পুনরায় আশ্বাস দেবেন বলেও জানান বাইডেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি পদক্ষেপে আমরা নিশ্চিত করব যে, যুক্তরাষ্ট্র আবারও ফিরে এসেছে।’
এয়ারফোর্স ওয়ানে চড়ে যাত্রা শুরু করার আগে জো বাইডেন বলেন, এই সফরে তাঁর লক্ষ্য মিত্রদের সঙ্গে মৈত্রী জোরদার করা এবং রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ও চীনকে বার্তা দেওয়া যে, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র সুদৃঢ় অবস্থানে রয়েছে। নানা ইস্যুতে ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। গত এপ্রিলে পুতিন অভিযোগ করেন, পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ব্যাপারে নাক গলানোর চেষ্টা করছে। পশ্চিমা শক্তিদের সীমা অতিক্রম না করতে হুঁশিয়ারিও দেন পুতিন।
গ্রুপ অব সেভেনভুক্ত (জি৭) অন্য দেশের নেতারা আগামী শুক্রবার ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় কর্নওয়ালে পৌঁছাবেন। চলতি সপ্তাহের শেষে সেখানে এই নেতারা বৈঠকে বসবেন। বিশ্বের তথাকথিত অগ্রসর অর্থনীতির সাতটি দেশ নিয়ে জি৭ গঠিত। দেশগুলো হলো—কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। জানা গেছে এবারের জি৭ আলোচনায় গুরুত্ব পাবে কোভিড-১৯ মহামারি। এদিকে মার্কিন গণমাধ্যমগুলো বলছে, আগামী দুই বছরে বাইডেন প্রশাসন প্রায় ১০০ দেশে ফাইজারের টিকার ৫০ কোটি ডোজ বিতরণ করবে।