সংগঠটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত জরিপে বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের প্রতি অনাস্থা দাঁড়িয়েছে ৯৫ শতাংশের বেশি। তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেওয়ার পর বাজার মূলধন হারিয়েছে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা। মার্কেট সূচক হারিয়েছে প্রায় ১ হাজার ১০০ পয়েন্ট।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠাটির পক্ষ থেকে বক্তব্য তুলে ধরেন সভাপতি এস এম ইকবাল হোসেন। এতে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মো. আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল।
বিসিএমআইএ সভাপতি বলেন, পুঁজিবাজার উন্নয়ন ও শক্তিশালীকরণ এর লক্ষ্যে রোববার (১১ মে) অর্থ উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ও বিএসইসির চেয়ারম্যানকে নিয়ে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এখন পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে শেয়ারবাজার বোঝে এবং উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে এমন কাউকে রাখা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, যেখানে স্টক এক্সচেঞ্জ, মার্চেন্ট ব্যাংকার, ব্রোকার, সম্পদ ব্যবস্থাপক, বিনিয়োগকারীদের প্রতিনিধিসহ এসব স্টেকহোল্ডারদের কেউ থাকবে না। অথচ এরাই শেয়ারবাজারের বিদ্যমান সমস্যার কারণ বোঝে। বিপরীতে যাদের নিয়ে অভিযোগ, তাদেরকেই রাখা হয়েছে বৈঠকে। তাই স্বাভাবিকভাবেই তারা তাদের ব্যর্থতা তুলে ধরবেন না প্রধান উপদেষ্টার কাছে।
বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যান যোগ দেওয়ার পর শেয়ারবাজারের একটি চিত্র তুলে ধরেন বিনিয়োগকারীদের এই নেতা। তিনি বলেন, বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যান যোগ দেওয়ার পর মার্কেট মূলধন হারিয়েছে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা। মার্কেট সূচক হারিয়েছে প্রায় ১ হাজার ১০০ পয়েন্ট। ৯০ শতাংশ বিনিয়োগকারী পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত জরিপে বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের প্রতি অনাস্থা দাঁড়িয়েছে ৯৫ শতাংশের বেশি। ৯৫ শতাংশ বিনিয়োগকারী তার অপসারণ চাচ্ছেন। মার্কেট আরএসআই ১১ বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে সর্বনিম্ন এবং বিশ্ব রেকর্ডও বটে। প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার ক্লিনিক্যালি ডেড হয়ে গেছে।
এই বিনিয়োগকারী নেতা বলেন, পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সবাই ইতোমধ্যে মন্তব্য করেছেন যে, বর্তমান কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পুঁজিবাজার নিয়ে কোনো ধারণা নেই, বাস্তব অভিজ্ঞতাও নেই। এমনকি পুঁজিবাজারের উন্নতি ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের কোনো সদিচ্ছাও নেই। একটি প্রতিষ্ঠান যথাযথভাবে পরিচালনার জন্য প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বের যোগ্যতা ও গুণাবলি থাকা প্রয়োজন যার কিছুই নেই তার মধ্যে।
ইকবাল হোসেন বলেন, কমিশনের ওপরে আস্থার সংকটের কারণে গত ৮ মাসেও মৌলভিত্তিক কোনো কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসার জন্য কোনো আগ্রহ দেখায়নি। এতে শেয়ারবাজার নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। বিধিতে না থাকা সত্ত্বেও নিজেদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ, যার মধ্যে আপ্যায়ন বাবদ প্রতিমাসে চেয়ারম্যান ৩ হাজার টাকা এবং প্রত্যেক কমিশনারের জন্য ২ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ থাকলেও বাস্তবে চেয়ারম্যান প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা এবং কমিশনাররা ১৫ হাজার টাকা করে উত্তোলন করেছেন এবংসরকারি নিয়ম অনুযায়ী কমিটির সদস্যদের প্রতি সভার সম্মানি ভাতা বাবদ ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা প্রদানের উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে তারা প্রতি মাসে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ব্যতিরেকে বহিঃসদস্যদের প্রতি মাসে দুই লাখ টাকা প্রদান করা হচ্ছে। যা সম্পূর্ণরূপে পুঁজিবাজারের স্বার্থ বিরোধী এবং বেআইনি।
তিনি আরও বলেন, বিধির বিভিন্ন শর্ত ও যোগ্যতা শিথিল করে নিজের পছন্দমতো বিভিন্ন তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে স্বাধীন পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। সিকিউরিটিজ আইন বহির্ভূতভাবে বিনিয়োগকারীদের সিসিএ অ্যাকাউন্টে অর্জিত সুদ প্রদান থেকে বিনিয়োগকারীদেরকে বঞ্চিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন; যা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের পরিপন্থি।