আইপিএল নিলামে কোটিপতি বনে যাওয়া বৈভবের ব্যাট থেকে এলো একের পর এক বাউন্ডারি। রেকর্ডের পর ভাঙল রেকর্ড। রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে ব্যাট করতে নেমে যেন কীর্তি গড়ার নেশায় পেয়ে গিয়েছিল বিহারের কিশোর এই ব্যাটারের। সবচেয়ে কম বয়সি ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলে শতরান করলেন। ১৭ বলে অর্ধশত রান করে আইপিএলে কনিষ্ঠতম হিসেবে কীর্তিও গড়লেন তার আগে। শেষ পর্যন্ত বৈভবের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৮ বলে ১০১ রান। ৭টি চার এবং ১১টি ছক্কা রয়েছে তার ইনিংসে।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে শতরানের কীর্তিতে নাম লেখালেন বৈভব। ১৪ বছর ৩২ দিন বয়সে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছালেন। আগের রেকর্ড ছিল বিজয় জোলের। ২০১৩ সালে মহারাষ্ট্রের ব্যাটার মুম্বাইয়ের বিরুদ্ধে শতরান করেছিলেন ১৮ বছর ১১৮ দিন বয়সে। এ ছাড়া ২০২০ সালে বিপিএলে বরিশালের হয়ে পারভেজ হোসেন ইমন ১৮ বছর ১৭৯ দিন বয়সে রাজশাহীর বিপক্ষে শতরান করেছিলেন।
আইপিএলের নিলামে বৈভবকে ১ কোটি ১০ লাখ রুপিতে কিনে হইচই ফেলে দিয়েছিল রাজস্থান কর্তৃপক্ষ। তখন অনেক ক্রিকেট বিশেষজ্ঞই ভ্রু কুঁচকেছিলেন। বিহারের কিশোর ক্রিকেটারের ওপর আস্থা রেখেছিলেন রাজস্থান কোচ রাহুল দ্রাবিড়। ভারতীয় ক্রিকেটের ‘দ্য ওয়াল’ বলেছিলেন, বৈভবকে পূর্ণ ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তুলবে রাজস্থান। দ্রাবিড় যে শুধু কথার কথা বলেননি, তা আইপিএলে সুযোগ পেয়েই প্রমাণ করছে বৈভব। লখনৌ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে প্রথম খেলার সুযোগ পেয়েছিল বৈভব। ক্যারিয়ারের প্রথম বলেই শার্দূল ঠাকুরের মতো অভিজ্ঞ বোলারকে ছয় মেরেছিল। তখনই বোঝা গিয়েছিল, কোন মানসিকতা নিয়ে ব্যাট করতে নেমেছেন আইপিএলের কনিষ্ঠতম ক্রিকেটার।
আজ গুজরাটের ইশান্ত শর্মা, সিরাজ, ওয়াশিংটন সুন্দরদের মতো বোলারদের নিয়ে এক রকম ছেলেখেলা করলেন বৈভব। রশিদ খানের মতো বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলারও সুবিধা করতে পারলেন না! জুনিয়র সতীর্থের দাপট দেখে যশস্বী জয়সওয়ালের (৪০ বলে ৭০) মতো ব্যাটারও আড়ালে পড়ে রইলেন। গুজরাটের দেওয়া ২১০ রানের বড় টার্গেট তাড়া করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতেই উঠল ১১.৫ ওভারে ১৬৬ রান! গুজরাটের বোলাররা যেখানেই বল ফেলেছেন, বৈভবের হাত থেকে রেহাই মেলেনি।
বৈভব ঝড়ের পর ১৫ দশমিক ৫ ওভারেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় রাজস্থান। ৮ উইকেটের জয়ে ম্যাচে সেরা খেলোয়ারও হয়েছেন ভারতের আগামীর তারকা বৈভব রাজবংশী।