মহাখালীর সাততলা বস্তিতে অবৈধ গ্যাস ও বৈদ্যুতিক সংযোগ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন। সোমবার (৭ মার্চ) সকাল ৭টায় ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ফায়ার সার্ভিসের এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, আমরা অগ্নিকাণ্ডের খবর পাই ভোর ৩টা ৫৯মিনিটে। ১৩ মিনিটের মধ্যে আমাদের প্রথম ইউনিট (৪টা ১২ মিনিটে) ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং তখন থেকে আমরা কাজ করছি। পরে ভোর ৬টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তিনি আরও বলেন, বস্তিতে টিনের ঘর অনেক বেশি সেপারেশন হওয়ায় আমাদের আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আমাদের ১৮টি ইউনিট কাজ করেছে। এখন পর্যন্ত আগুনে কোন হতাহতের ঘটনা আমাদের চোখে পড়েনি, কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনই বলা সম্ভব নয়, তবে শতাধিক ঘর পুড়ে গেছে বলে আমরা ধারণা করছি। ঘরে থাকা আসবাবপত্র পুড়ে গেছে।
আগুন লাগার কারণ প্রাথমিকভাবে ফায়ার সার্ভিস কী মনে করছে?- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে প্রচুর পরিমাণে অবৈধ গ্যাস ও বিদ্যুতের লাইন রয়েছে। আমরা প্রাথমিকভাবে মনে করছি, এই দুইটার থেকে যেকোনো একটি কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। আগুন নেভানোর ক্ষেত্রে কী কী প্রতিবন্ধকতা ফায়ার সার্ভিস পেয়েছে? -এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঘনবসতি এবং বেশি সেপারেশন থাকায় আমাদের ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের আগুনের নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছাতে কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে আগুন নেভাতে কিছুটা সময় বেশি লেগেছে। এছাড়া দাহ্য বস্তু উপস্থিতি বেশি থাকায় আগুনটা বেশি ছড়িয়েছে।
আগুনের কারণ অনুসন্ধানে এখনও তদন্ত কমিটি হয়নি জানিয়ে ফায়ারের ডিজি বলেন, তবে একজন ডেপুটি ডিরেক্টরের (ডিডি) নেতৃত্বে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটির অনুসন্ধানে আগুনের প্রকৃত কারণ বেরিয়ে আসবে বলে আমরা আশা করছি।
এর আগে ভোর ৪টার দিকে ভয়াবহ এ আগুনের সূত্রপাত হয়। প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকলে আরও বাড়ানো হয় ইউনিটের সংখ্যা। ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট আড়াই ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনত সক্ষম হয়।
সূত্র জানায়, এর আগে ২০১২, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে ডিসেম্বরে এবং ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর মহাখালীর এই বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। প্রতিবারই বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। অবৈধ বৈদ্যুতিক সংযোগের দুর্বল তারের কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। আর সেই ঝুঁকি এখনও রয়ে গেছে।