টেলিভিশনের ফুটেজে দেখা যায়, হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভকারীরা নানা স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে জড়ো হয়েছেন। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল—‘ইমিগ্রেন্টস আর ওয়েলকাম হেয়ার’, ‘স্টপ আর্মিং ইসরায়েল’, ‘ওয়ার্কার্স শুড হ্যাভ দ্য পাওয়ার’, ‘রেসিস্ট টায়রানি বন্ধ করো’ এবং ‘ঘৃণা কোনো জাতিকে মহান করে না’। এসব স্লোগানের মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসনের বিভিন্ন বিতর্কিত নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান তারা।
লাফায়েট স্কয়ারে এক বিক্ষোভকারী বলেন, “ট্রাম্প ও তার প্রশাসন অভিবাসনবিরোধী আইন ব্যবহার করে আমাদের প্রতিবেশীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দিতে চাইছে। আমরা এখন প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।”
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া অনেককেই দেখা যায় ফিলিস্তিনি পতাকা ও কেফিয়েহ পরে অবস্থান নিতে। তারা গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানান এবং ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ বলে স্লোগান দেন। অন্যদিকে, ইউক্রেনের সমর্থনে ব্যানার হাতে থাকা বিক্ষোভকারীরা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কিছু আলোচিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) নেতৃত্ব দেন ইলন মাস্ককে, যার পর থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের ২৩ লাখ কর্মচারীর মধ্যে ২ লাখের বেশি পদ শূন্য হয়ে গেছে।
এছাড়া, প্রশাসনের উদ্যোগে সম্প্রতি বহু বিদেশি শিক্ষার্থীকে আটক করে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এদের অনেকেই ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। ট্রাম্প সরকারের জলবায়ু ও স্বাস্থ্যনীতিও ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। অধিকার গোষ্ঠীগুলোর মতে, এসব সিদ্ধান্ত মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায়ের পরিপন্থী।
শনিবারের বিক্ষোভের আয়োজক ছিল ‘৫০৫০১’ নামের একটি আন্দোলনকারী গোষ্ঠী, যার অর্থ—৫০ অঙ্গরাজ্যে ৫০টি বিক্ষোভ, ১টি আন্দোলন। তারা দিনটিকে ঘোষণা করেছে ‘ন্যাশনাল ডে অব অ্যাকশন’ হিসেবে। আয়োজকদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রায় ৪০০টি স্থানে একযোগে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
এর আগে, গত ৫ এপ্রিল ‘ইনডিভিজিবল’ নামের একটি সংগঠন ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের বিরুদ্ধে প্রথম বড় বিক্ষোভের আয়োজন করেছিল।
‘৫০৫০১’ আগামী ১ মে আরও একটি দেশব্যাপী কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে, যার নাম ‘মে ডে স্ট্রং’ বা ‘মে দিবসের শক্তি’। এই দিনে শ্রমিক ও অভিবাসীদের অধিকার রক্ষায় আরও বড় পরিসরে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সংগঠনটি।