সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) কর্তৃক আয়োজিত ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আজ (শুক্রবার) সিপিডির পর্যালোচনায় কালো টাকার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সংস্থাটির সম্মানীয় ফেলো ড. মো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ পেয়েও যারা নেয়নি তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত বলে মনে করে । অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, একটা বিষয় প্রযোজ্য আছে যে, কেউ অপ্রদর্শিত টাকা প্রযোজ্য করের সঙ্গে ১০ শতাংশ অতিরিক্ত পেনাল্টি দিয়ে সাদা করতে পারবেন। আর দ্বিতীয় সুযোগের বিষয়টি হচ্ছে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ কিংবা বিভিন্ন বন্ডসহ বিনিয়োগ করে ১০ শতাংশ কর দিয়ে সাদা করতে পারেন। তৃতীয় বিষয়টি হচ্ছে গত বছর যোগ করা ফ্ল্যাট কিংবা ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা অপ্রদর্শিত থাকলে তা কর দিয়ে সাদা করার সুযোগ।
তিনি আরও বলেন, এখানে প্রথম দুইটির বিষয়ে সুযোগ কিন্তু বিদ্যমান। তৃতীয়টির বিষয়ে বাজেটে কিছু বলা হয়নি। সেক্ষেত্রে ধরে নিতে পারি এ সুযোগ থাকবে না। প্রথম সুযোগটি পৃথিবীর অনেক দেশেই আছে। তবে সেটা বৈধ আয় করতে হবে। অবৈধ আয় বৈধ করার সুযোগ নেই। সেক্ষেত্রে দুদকসহ অন্যান্য সংস্থা চাইলে ধরতে পারবে।
দ্বিতীয় সুযোগের বিষয়ে বলবো এটা একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত করা উচিত। এরপরও যারা সুযোগ নেয়নি তাদেরক আইনের আওতায় নিয়ে আসা উচিত। এটা পৃথিবীর সব জায়গায় আছে।
অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ আর থাকবে কি না, সে বিষয়ে প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন কোনো নির্দেশনা নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজার ও আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। ওই বাজেট প্রস্তাবনায় পুঁজিবাজার ও আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন হয়নি এমন জমি বা ফ্ল্যাট বৈধ করার সুযোগ ছিল। যা আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত অটুট রয়েছে বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এতদিন অতিরিক্ত ১০ শতাংশ হারে কর দিয়ে একজন বিনিয়োগকারী তার অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট কিনতে পারতেন, যেখানে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার কোটি টাকা সাদা হয়েছে। বর্তমানে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও অপ্রদর্শিত অর্থ অর্থনীতির মূলধারায় আনতে শর্ত সাপেক্ষে ১০ শতাংশ কর দিয়ে শেয়ার, স্টক, মিউচুয়াল ফান্ড, বন্ড, ডিভেঞ্চারে বিনিয়োগ করা যায়।
এছাড়া, অপ্রদর্শিত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, নগদ টাকা, ব্যাংক আমানত, সঞ্চয়পত্র রিটার্ন প্রদর্শনের মাধ্যমে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ রয়েছে। এজন্য অর্থবিলের মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশে এ সংক্রান্ত একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে।