সরকার ইসি থেকে এনআইডি সরিয়ে নিতে পৃথক কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এই শঙ্কা আরও বেড়েছে প্রকল্প কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। ফলে তারাও এনআইডি ইসির অধীনে রাখা এবং চাকরি রাজস্ব খাতে নেওয়ার জন্য চলমান আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। তারা বলছেন, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অন্যতম সাংবিধানিক দায়িত্ব ভোটার নিবন্ধন, ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সংরক্ষণ এবং জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা প্রদান। ২০০৭-০৮ সালে ‘অপারেশন নবযাত্রা’-এর মাধ্যমে এই কার্যক্রমের সূচনা হয়, যা পরবর্তীতে আইডিইএ এবং আইডিইএ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে আরও আধুনিক, নিরাপদ ও কার্যকর হয়। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে এই প্রকল্পের দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল নিরবচ্ছিন্নভাবে এনআইডি সেবা দিয়ে আসছে। কিন্তু, দুঃখজনকভাবে আজও এই জনবলকে রাজস্বখাতে স্থানান্তর করা হয়নি।
প্রকল্পের কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমান সরকার এনআইডি কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন থেকে পৃথক করে অন্য কর্তৃপক্ষের অধীনে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করছে। এটি শুধু নির্বাচন ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার জন্য হুমকি নয়, বরং জনগণের তথ্যের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার জন্যও মারাত্মক ঝুঁকির কারণ। এই প্রেক্ষাপটে, নির্বাচন কমিশনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘স্ট্যান্ড ফর এনআইডি’ শীর্ষক কর্মসূচির আয়োজন করে, যেখানে আইডিইএ-২ প্রকল্প কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ একাত্মতা প্রকাশ করছে এবং সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছেন।
আইডিইএ-২ প্রকল্প কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মো. শাহাবুদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা ১৭ বছর ধরে দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে এনআইডি সেবা দিয়ে আসছি। কিন্তু, সরকার বারবার আশ্বাস দিয়েও আমাদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করেনি। এনআইডি নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কেন না এটি জনগণের ভোটাধিকার ও পরিচয় ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। চাকরি স্থায়ী করা এবং এনআইডি নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখার দাবি জানান মো. শাহাবুদ্দিন।
আইডিইএ-২ প্রকল্প কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব আশরাফুর রহমান বলেন, সরকার যদি এনআইডি নির্বাচন কমিশনের বাইরে নিয়ে যায়, তাহলে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা, ভোটার তালিকার স্বচ্ছতা এবং জাতীয় পরিচয় সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। আমরা এনআইডি নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখার জন্য সরকারকে আহ্বান জানাই এবং আমাদের চাকরি রাজস্বখাতে স্থানান্তরের জোর দাবি জানাই।