আজ বুধবার (১২ মার্চ) সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মুহিদুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
মুহিদুল ইসলাম জানান, গতকাল মঙ্গলবার ফরিদপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে ভিকটিমের ফ্ল্যাট থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো বটি, একটি ধারালো চাকু ও রক্ত মাখা জামা-কাপড় এবং বিছানার চাদর উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ডিসি মো. মুহিদুল ইসলাম বলেন, উত্তরখান থানা সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার (১০ মার্চ) গভীর রাতে হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভুঁইয়া উত্তরখানের পুরানপাড়া বাতান এলাকার একটি ছয়তলা বিল্ডিংয়ের ৪র্থ তলার ৬নং ফ্ল্যাটে খুন হন। এ ঘটনায় তার ছোট ভাই মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ভুঁইয়া বাদী হয়ে উত্তরখান থানায় গতকাল একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ভিকটিম সাইফুর রহমান ভুঁইয়া উত্তরখানের পুরানপাড়া বাতান এলাকায় তার স্ত্রীর পৈতৃক সম্পত্তিতে বাড়ি নির্মাণের কাজ দেখাশোনার উদ্দেশে গত তিন থেকে চার মাস ধরে ওই এলাকার একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। গত সোমবার বিকেলে বাদী সংবাদ পান তার বড় ভাইকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে তার শয়ন কক্ষের ভিতর ফেলে রেখেছে। পরে স্থানীয় লোকজন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। পরে চিকিৎসারত অবস্থায় পরদিন মঙ্গলবার সকালে তিনি মারা যান। উত্তরখান থানা পুলিশ মরদেহের সুরতহাল প্রস্তুত করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে প্রেরণ করে।
মুহিদুল ইসলাম বলেন, থানা সূত্র আরও জানায়, মামলাটি রুজুর পর ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ১২ ঘণ্টার কম সময়ে হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে ফরিদপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় তাদের কাছ থেকে দুটি মোবাইলফোন, একটি চাবির রিং ও একটি ব্যাংকের ভিসা কার্ড উদ্ধার করা হয়।
ডিএমপির উত্তরা বিভাগের এই উপপুলিশ কমিশনার আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, ঘটনার দুই থেকে তিন দিন আগে কমলাপুর রেলস্টেশনে ভিকটিম মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়ার সঙ্গে আসামি মো. নাজিম হোসেন ও রুপা বেগম ওরফে জান্নাতির হয়। পরিচয় হওয়ার সুবাদে ভিকটিম তাদেরকে নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন। একপর্যায়ে মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভুঁইয়া রুপা বেগম ওরফে জান্নাতিকে ফ্ল্যাটে আটক করে যৌন নির্যাতনের চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় ক্ষোভ থেকে ধারালো বটি দিয়ে মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়াকে আঘাত করে পালিয়ে যান আসামিরা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা এই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।