মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা পৌনে তিনটার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। নিজের পদত্যাগের বিষয়ে জানাতে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল ইসলামসহ প্রেস উইংয়ের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, সরকারের চেয়ে রাজপথে আমার ভূমিকা বেশি হবে। আমার সহযোদ্ধারাও সেটা চান। এজন্য পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এখনো পূরণ হয়নি। এজন্য সরকারের চেয়ে বাইরে বেশি প্রয়োজন বোধ করেছি।
উপদেষ্টা পরিষদে ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে এখনো আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম রয়েছেন। তারা পদত্যাগ করবেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে দুজন এখন আছেন তারাও যখন প্রয়োজন বোধ করবেন, সরকার থেকে বেরিয়ে আসবেন।
আজ থেকে সরকারের কোনো দায়িত্বে নেই জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী এই শিক্ষার্থী বলেন, নতুন দলে যোগ দেওয়ার অভিপ্রায় আছে। জনগণের সঙ্গে মিশে আবারও জনগণকে নিয়ে কাজ করতে চাই।
এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করা নাহিদ ইসলাম বলেন, গত ছয় মাসে আমার জায়গা থেকে কাজ করার চেষ্টা করেছি। দুটি মন্ত্রণালয়ের বাইরেও অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। কিছু কাজ করেছি, সেই ফলাফল হয়ত জনগণ পাবে। ছয় মাস সময় খুব কম। তবুও চেষ্টা করেছি।
এর আগে দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের অনানুষ্ঠানিক বৈঠক শেষে নাহিদ ইসলামের পদত্যাগের খবর জানায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
নাহিদ ইসলাম আগামী শুক্রবার তরুণদের নেতৃত্বে যে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হতে যাচ্ছে সেই দলের আহ্বায়ক হচ্ছেন। তিনি পদত্যাগ করতে পারেন সেই গুঞ্জন কিছু দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল। নিজেও জানিয়েছিলেন, রাজনৈতিক দলে যোগ দিলে পদত্যাগ করেই যোগ দেবেন।
গত জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ নেতৃত্বে ছিলেন নাহিদ ইসলাম। তিনিই কর্মসূচি ঘোষণা করতেন। যে ছয় শিক্ষার্থীকে ডিবি কার্যালয়ে আটকে রাখা হয় তাদের অন্যতম ছিলেন তিনি। তাছাড়া তাকে তুলে নিয়ে ব্যাপক নির্যাতনও চালিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়, তাতে উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই মেধাবী শিক্ষার্থী। পরে তাকে তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।