এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে যেসব পণ্য দেশে উৎপাদন হয় না সেগুলোর আমদানি শুল্ক কমিয়ে চাহিদা অনুসারে পণ্য আমদানির সুযোগ দিতে হবে। এছাড়া টাস্ক ফোর্স গঠন করে বাজারে কারা এসব পণ্য নকল করছে তা খুঁজে বের করতে হবে। সর্বোপরি বাজারে শৃঙ্খলা আনতে দীর্ঘ, মধ্যম ও স্বল্প মেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।
সোমমার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামে (ইআরএফ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের বাজারে ভেজাল পণ্যের প্রভাব এবং জনস্বাস্থ্যে এর ক্ষতিকর দিক’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
ইআরএফ এবং বাংলাদেশ ফুডস্টাফ ইমপোর্টার্স অ্যান্ড সাপ্লায়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফিসা) যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের (ডিএনসিআরএপি) মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান।
ইউএসডিএ ফান্ডেড বাংলাদেশ ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন প্রজেক্টের সহায়তায় এই সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
ইআরএফের সভাপতি রেফায়েতুল্লাহ মৃধার সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য দেন- বাফিসার সভাপতি মোহাম্মদ বোরহান ই সুলতান, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ ফুড সেফটি অথরিটির সদস্য ড. মোহাম্মদ মোস্তফা, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউটের (বিএসটিআই) সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আরাফাত হোসেনসহ আরও অনেকে।
সেমিনারে বাংলাদেশের বাজারে নকল পণ্য তৈরি ও উৎপন্নের কারণ ও প্রতিকারের বিষয়গুলো তুলে ধরে বক্তারা বলেন, যখন বাজারে আসল পণ্যের চাহিদা অনুপাতে সরবরাহ কম থাকে অথবা যেটুকু সরবরাহ আছে তার মূল্য খুব বেশি বেড়ে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায় তখন কিছু অসাধু ব্যক্তি অতি মুনাফার আশায় নকল পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করে। আর এটি তখনই বেশি হয় যখন আমদানিকৃত পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ফলে পণ্যের বিক্রয়মূল্য অতিরিক্ত বেড়ে যায়। বিভিন্ন বিদেশি ব্র্যান্ডের মোড়ক ও প্যাকেট তৈরি করে অসাধু ব্যক্তিরা এই নকল পণ্য তৈরি করে।
এই নকল পণ্য এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি পণ্য খেয়ে মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে। এছাড়া আমদানি কমে আসায় সরকার প্রতি বছর বিরাট অঙ্কের রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
ডিএনসিআরপির মহাপরিচালক বলেন, দেশেরে বাজার থেকে নকল ও ভেজাল পণ্য দূরীকরণের জন্য নৈতিক সচেতনতা তৈরি করতে হবে। এই নৈতিকতার ঘাটতির কারণে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও আমরা উন্নত দেশ গড়তে পারিনি। অথচ আমাদের পরে স্বাধীন হয়ে অনেক দেশে এগিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, দেশে দারিদ্রর হার বেশি হওয়ায় নকল পণ্যও বেশি হচ্ছে। কারণ গরিব মানুষ সস্তায় পণ্য খোঁজেন। আর সস্তায় পণ্য খুঁজলে নকল তো হবেই। এছাড়া শিক্ষার হার বাড়ানো ও মানুষের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনেরও প্রয়োজন রয়েছে। তাতে মানুষকে সচেতন করা সহজ হবে।
মুহাম্মদ আরাফাত বলেন, দেশে ভেজাল খাদ্য বা পণ্য প্রতিরোধে একটা টাস্ক ফোর্স গঠন করা প্রয়োজন। যেখানে সরকারি বেসরকারি সবপক্ষের প্রতিনিধি থাকবেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইআরএফের সভাপতি রেফায়েতুল্লাহ মৃধা। সভায় বক্তব্য প্রদান করেন ইআরএফ এর সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমসহ আরো অনেকে।