তিনি বলেন, সাড়ে ১৫ বছর আমরা দফায় দফায় আন্দোলন সংগ্রাম করেও স্বৈরাচারকে তাড়াতে পারিনি। আমি গর্বিত আমাদের সন্তানেরা সেই কাজটি করে দেখিয়েছে। আল্লাহর সাহায্যে অসাধ্য সাধন করেছে। এরকম সন্তান পেয়ে জাতি গর্বিত। আগামীর বাংলাদেশ আমরা তাদের হাতে তুলে দেব।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা আমির মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের আমীর ইঞ্জিনিয়ার মো শাহেদ আলী।
বক্তব্যে জামায়ত আমির স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। বলেন, জাতির পক্ষ থেকে তাদের স্যালুট জানাচ্ছি। সন্তানদেরকে ভালোবাসা উপহার দিচ্ছি।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, আজকে যুবকরা বলছে আমাদের ভোট চুরি করেছিল। তিনটা নির্বাচন, আজ যাদের বয়স ৩০-৩২ বছর; তারা একটা ভোটও দিতে পারেনি। তারা ভোটের, গণতন্ত্রের কবর রচনা করল। এদের বিচার বাংলার মাটিতে করতে হবে। প্রত্যেকটা অন্যায় অপরাধের বিচার করতে হবে। জাতিকে এরা ৫৩ বছর বিভিন্ন কায়দায় ফ্যাসিজমের মাধ্যমে দ্বিধাবিভক্ত করে রেখেছে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি, বিপক্ষের শক্তি, মেজরিটি শক্তি, মাইনরটি শক্তি, কতভাবে যে ভাগ করেছে এরা- তার ইয়ত্তা নেই। কারণ একটা জাতিকে যখন টুকরা টুকরা করা যায়, তখন তাদের গোলাম বানানো সম্ভব। এরা ধরে নিয়েছিল তারা দেশের মালিক, আমরা সবাই ভাড়াটিয়া।
জামায়াতের ওপর আওয়ামী নির্যাতনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, যেখানে আমাদের শীর্ষ ১১ নেতাকে খুন করা হয়েছে, সবগুলো অফিস তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে, আমাদের বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যেখানে নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছে, বেদিশা হয়ে শেষ পর্যন্ত নিষিদ্ধ পর্যন্ত করা হয়েছে। এত যন্ত্রণা বুকে থাকা সত্ত্বেও আমরা বলেছি দেশকে ভালোবাসি, মানুষকে আমরা ভালোবাসি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা একটা সাম্যের বাংলাদেশ গড়ে তুলব। বৈষম্যকে নির্বাসনে পাঠাব। আমরা মেধার স্বীকৃতি প্রদান করব, পলিটক্রেসি নয়, মেরিটক্রেসির ভিত্তিতে জাতি গঠন করব। যুবকদেরকে আদর্শ শিক্ষা দিয়ে তাদের হাতকে কর্মীর হাতে পরিণত করব।
চা শিল্প রক্ষার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, মৌলভীবাজারে দেশের সবেচয়ে বেশি চা বাগান। রাষ্ট্রীয় যথাযথ পর্যবেক্ষণ না থাকায় চা শিল্প ধ্বংস হওয়ার পথে। মালিক পক্ষ চায়ের যথাযথ মূল্য পান না। শ্রমিকরাও পারিশ্রমিক পান না।
তিনি নেতাকর্মীদের চারটি বিষয় তুলে ধরেন। এর মধ্যে নিয়ত সঠিক করে জ্ঞানের রাজ্যে এগিয়ে গিয়ে সাহসী হয়ে কঠোর পরিশ্রম ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠান যৌথভাবে পরিচালনা করেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুহাম্মদ ইয়ামির আলী ও সহকারী সেক্রেটারি হারুনুর রশিদ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাড এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির মো. ফখরুল ইসলাম ও সিলেট জেলা আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান প্রমুখ।