অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান তখনই সফল হবে, যদি আমরা একটি সুন্দর আদর্শ গণতান্ত্রিক দেশে রূপান্তরিত হতে পারি। আর বর্তমান সরকার বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শাসনের শান্তিপূর্ণ রূপান্তর করার চেষ্টা করছে।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বেসরকারি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) ২৫তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. সাহাবুদ্দিনের পক্ষে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তিনি। সমাবর্তনে ৮ হাজার ১৯ জন শিক্ষার্থীকে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি দেওয়া হয়।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় এবং দেশের সমগ্র শাসনব্যবস্থায় মেধাতন্ত্রকে বহু বছর ধরে সবচেয়ে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। একই সময়ে আমরা আমাদের সাধারণ নৈতিকতার মানকেও অধঃপতিত করেছি।
সমাবর্তন বক্তা ছিলেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস। গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা ও ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়া নির্ভর করছে আপনাদের ওপর। আগামী প্রজন্মকে আশা, সম্মান এবং সাম্যের আলোকবর্তিকা হিসেবে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব আপনাদের।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ও সমাবর্তনের সভাপতি অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ কৃতিত্বপূর্ণ ফলের জন্য ২০ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক ও ভাইস চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক প্রদান করেন।
স্বর্ণপদক প্রাপ্তদের মধ্যে ২০২২ এবং ২০২৩ সালের স্নাতক ব্যাচের ভ্যালেডিক্টোরিয়ানদ্বয় তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। পরে শিক্ষা উপদেষ্টা অনুমোদনক্রমে উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী সমাবর্তন কার্যক্রম শুরু করেন।
সমাবর্তনে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ। তিনি গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের কৃতিত্বের জন্য অভিনন্দন জানান এবং তাদের কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা এবং দৃঢ়তার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, গ্রাজুয়েটদের জীবনে আজ অনেক দিনের স্বপ্ন সফল হওয়ার দিন। তাদের কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের ফসল এই দিনকে স্বরণীয় করে রাখতে আমরা সমবেত হয়েছি। আজ আমাদের সবার জন্য গর্ব ও আনন্দের দিন।
অন্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক্সের ডিন অধ্যাপক এ কে এম ওয়ারেসুল করিম, স্কুল অব হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেসের ডিন অধ্যাপক মো. রিজওয়ানুল ইসলাম, স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ফিজিক্যাল সায়েন্সেসের ডিন অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন এবং স্কুল অব হেলথ অ্যান্ড লাইফ সায়েন্সের ডিন অধ্যাপক দীপক কুমার মিত্র ডিগ্রি প্রার্থীদের তথ্য শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টার হাতে তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের পাশাপাশি এনএসইউ’র বোর্ড সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তবে আইনি জটিলতায় এনএসইউ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চার জ্যেষ্ঠ সদস্য সমাবর্তনে উপস্থিত ছিলেন না। তারা হলেন এম. এ কাশেম, রেহানা রহমান, বেনজীর আহমেদ ও মোহাম্মদ শাহজাহান।