রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আন্তর্জাতিক শ্রম বিষয়ক মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিশেষ প্রতিনিধি কেলি এম ফে রদ্রিগেজের নেতৃত্বে ২০ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। এসময় বাণিজ্য সচিব সেলিম উদ্দিন, মার্কিন দূতাবাসের প্রধান মেগান বোল্ডিংসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, লেবার রাইটসকে আরও যুগোপযোগী করাসহ শ্রমিকের অধিকার নিয়ে আমাদের যে ১১ দফা কর্মসূচি আছে সেটা বাস্তবায়নে বিশদ আলোচনা করেছি। আমরা কত দ্রুত এই ১১ দফা বাস্তবায়ন করতে পারি সেটাই মূলত আলোচনা হয়েছে।
১১ দফায় কি আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা পেতে গেলে আমাদের লেবার রাইটসের বিষয়ে যে জিনিসগুলো
(একটি প্রতিষ্ঠানে আইএলও কনভেনশন, দেশের প্রচলিত শ্রম ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক আইন, বায়ার আচরণবিধি কোম্পানির নিজস্ব নিয়ম-কানুন) আছে সেগুলো কমপ্লায়েন্স করতে হবে। সেটা করতে পারলে আমরা অবশ্যই জিএসপি সুবিধা পাবো বলে আশা রাখি।
এসময় বাণিজ্য সচিব বলেন, এ বিষয়ে শ্রম মন্ত্রণালয় কাজ করছে। মূলত শ্রমিকের জীবন-যাপন, মানোন্নয়ন এবং ইউনিয়ন অ্যাক্টিভিটিস করার জন্য এগুলো করা হচ্ছে। আমরা সবাই এক লাইনেই কাজ করছি। আজকে তারা নিয়মিত ভিজিটের অংশ হিসেবে এখানে এসেছেন। আমরা আমাদের দিক থেকে কীভাবে ট্রেড বাড়ানো, মার্কেট এক্সেস বাড়ানোর জন্য তাদের তাগিদ দিয়েছি। তারা এ বিষয়ে সহায়ক ভুমিকা পালন করবে। একই সঙ্গে তারা শ্রমিকদের লেবার রাইটস ইস্যু, নিরাপত্তা, ন্যূনতম মজুরিসহ অন্যান্য বিষয়ে নজর দিতে বলেছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার অনেক সংস্কার কাজে হাত দিয়েছে, লেবারখাতেও সংস্কার করার জন্য আলাদা একটি টিম কাজ করছে। এখানে শ্রম, পররাষ্ট্র, বাণিজ্য, অর্থ ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়সহ সবাই সমন্বিতভাবে কাজ করছে। মূলত তারা লেবার রাইটস ও লেবার ইউনিয়ন সংক্রান্ত ইস্যু নিয়েই আসছে। আর আমরা আমেরিকার অর্থনীতিতে আমাদের শুল্ক মুক্ত বাজার সুবিধা বাড়ানোর কথা বলেছি।
তৈরি পোশাক খাতের অস্থিরতা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তবে তারা এখাতকে আরো কীভাবে মানোন্নয়ন করা যায়, সেক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
১১ দফা কবে বাস্তবায়ন হবে এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, আমাদের শ্রম মন্ত্রণালয়ের একটা কর্মপরিকল্পনা রয়ছে সেটার অগ্রগতি তারা আস্থায় নিয়েছে।
আমেরিকার বাজারে এখন প্রায় ১৬ শতাংশ ডিউটি দিয়ে আমাদের পণ্য রপ্তানি করতে হয়— এ বিষয়ে কোনো কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব বলেন, আমরা এ বিষয়ে কথা বলেছি, জিএসপি সুবিধা যদি থাকতো তাহলে তো এটা দিতে হতো না। সে জন্য আমরা বলেছি জিএসপি সুবিধায় আমরা থাকতে চাই। জিএসপি ছাড়াও বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি পণ্য রপ্তানি হয় আমেরিকার বাজারে। আমরা ডিউটি ফ্রি, কোটা ফ্রি যে সুবিধাটা ইউরোপীয় ইউনিয়নে পাচ্ছি সেটা আমরা সব জায়গায় চাচ্ছি। তাদের বলেছি কিন্তু এরা সেই লাইনে কোনো কথা বলে না। তবে আমরা সে সুবিধাটা চেয়েছি। আমরা আমাদের অবস্থানের কথা জানিয়েছি।