ভারতের স্থলভাগে আছড়ে পড়েছে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। ওডিশার বালেশ্বরের দক্ষিণে ঘূর্ণিঝড়টি তাণ্ডব চালাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী তিন থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে ইয়াস উপকূল অতিক্রম করবে। সেই হিসাবে বলা যায়, বিকেল ৪টা নাগাদ ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডব শেষ হতে পারে।
বর্তমানে ঘূর্ণিঝড়টি ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার গতিতে আঘাত হানতে হানতে ডামরার উত্তর এবং বালেশ্বরের দক্ষিণ দিক দিয়ে ভারতের উত্তর ওডিশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করছে। বুধবার (২৬ মে) দুপুরে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মো. শামসুদ্দিন গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান।
আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়টির কারণে বাংলাদেশের উপকূল এলাকা বিশেষ করে খুলনা উপকূলে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও গতি ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
আবহাওয়ার ১৭নং বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করা প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আজ বেলা ১২টার নাগাদ ডামরার উত্তর এবং বালেশ্বরের দক্ষিণ দিক দিয়ে ভারতের উত্তর ওডিশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে তিন থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে উপকূল অতিক্রমের সম্ভাবনা রয়েছে।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কেন্দ্রের ৮৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রামের জেলাগুলো এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৮০-১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এছাড়া পূর্ণিমার প্রভাবে ঘূর্ণিঝড়টি খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে তিন থেকে ছয় ফুট অধিক উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।