ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে বারবার উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, নাহিদ ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা আমাদের নাগরিক। তাদের নিরাপত্তা আমাদের দায়িত্ব। ভারতকে এ বিষয়ে কিছু বলার দরকার নেই। বরং ভারতের উচিত ছিল, জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া গণহত্যা সম্পর্কে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করা।”
ভারতের সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যাচারের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “এই ধরনের মিথ্যাচার বন্ধ করা উচিত, এবং বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য আলোচনা হওয়া প্রয়োজন।”
জুলাই-আগস্টের গণহত্যা নিয়ে ভারতকে আরও কঠোর অবস্থান নিতে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, “গণহত্যায় অভিযুক্ত হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত হয়ে ভারতে পালিয়েছে, তাদের বিচার করতে ভারতের সহযোগিতা প্রয়োজন।”
বিবিসির সাংবাদিক সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে নাহিদ ইসলামকে প্রশ্ন করেন। তিনি জানান, বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং প্রশাসনের ওপর তাদের আস্থা নেই।
তিনি দাবি করেন, বর্তমানে সংখ্যালঘুরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তায় সন্তুষ্ট। আগের সরকার সংখ্যালঘুদের নিয়ে রাজনীতি করেছে, যার ফলে তাদের ওপর আস্থা কমেছিল। তবে এখন এই সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা চলছে।
বিবিসির সাংবাদিক নাহিদ ইসলামকে প্রশ্ন করেন, “আওয়ামী লীগের পতনের পর বাংলাদেশে উগ্রবাদী সংগঠনের তৎপরতা বাড়তে পারে কিনা?”
নাহিদ ইসলাম বলেন, “এটি একটি প্রোপাগান্ডা। আওয়ামী লীগ ও ভারত এই কথা প্রচার করে যে তারা ক্ষমতায় না থাকলে বাংলাদেশে উগ্রবাদ বাড়বে। কিন্তু এই ধারণা সঠিক নয়।”
তিনি আরও বলেন, “ভারতও আওয়ামী লীগের এই প্রোপাগান্ডা সমর্থন করেছে, আর বাংলাদেশে জনগণের বদলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছে। তবে বিজেপি বা কংগ্রেস, ভারত থেকে কোন দল ক্ষমতায় থাকে, তা বাংলাদেশের জনগণ বিচার করে না।”
বিবিসির সাংবাদিক বাংলাদেশ-ভারতের রেল, নৌ এবং সড়ক সম্পর্কিত যৌথ প্রকল্পগুলো নিয়ে প্রশ্ন করেন, এবং জানতে চান— এসব প্রকল্পের সুবিধা কি শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ পাবে, না বাংলাদেশ জনগণও উপকৃত হবে?
এ প্রশ্নে নাহিদ ইসলাম বলেন, “এই প্রকল্পগুলো শুধু আওয়ামী লীগ নয়, বাংলাদেশের জনগণকেই উপকৃত করবে। দুই দেশের সম্পর্কের ভিত্তিতে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে। ভারতের সঙ্গে থাকা কোনো প্রকল্প বন্ধ করা হয়নি, সব কিছু আগের মতোই চলছে।”
তিনি জানান, ভারতসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে চলমান প্রকল্পগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে, যাতে দেখা যায় এসব প্রকল্পে কোনো দুর্নীতি হয়েছে কিনা।