শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা আজ। মহামতি গৌতম বুদ্ধের আবির্ভাব, বোধি ও নির্বাণ লাভ এই দিনেই। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব এটি। সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশেও ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় পালিত হচ্ছে দিনটি। বৌদ্ধ ধর্মের প্রর্বতক গৌতম বুদ্ধ, আড়াই হাজার বছর আগে আজকের এই দিনে বর্তমান নেপালের প্রত্যন্ত লুম্বিনী গ্রামে এক রাজ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। হিংসা, বিদ্বেষ আর ঘৃণা দূর করে মানবতার আলো ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। আহ্বান জানিয়েছিলেন সম্প্রীতি, সহমর্মিতা আর শান্তিময় বিশ্ব গড়ার। বলেছেন, অহিংসা পরম ধর্ম।
বুদ্ধ বলেছেন, জগতে কর্মই সব। মানুষ তার কর্ম অনুসারে ফল ভোগ করবে। ভাল কাজ করলে ভাল ফল এবং খারাপ কাজের জন্য খারাপ ফল পাবে। কর্মানুসারে মানুষ অল্প আয়ু, দীর্ঘ আয়ু, জটিল ব্যাধিগ্রস্ত, নীরোগ, বিশ্রী-সুশ্রী, সুখী-দুঃখী, উঁচু-নিচু, জ্ঞান-মূর্খতা ইত্যাদি প্রাপ্ত হয়। মানুষ কর্মের অধীন।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, বুদ্ধ পূর্ণিমার প্রার্থনায় মূছে যাবে জীবনের সকল গ্লানি, দুঃখ আর বেদনা। আর তাই উপবাস, উপাসনা আর দেশের সমৃদ্ধি ও বিশ্ব শান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনা।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ উপলক্ষে দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেছেন, ‘মহামতি বুদ্ধ একটি সৌহার্দ ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় আজীবন সাম্য ও মৈত্রীর বাণী প্রচার করে গেছেন। “অহিংস পরম ধর্ম” বুদ্ধের এই অমিয় বাণী আজও সমাজে শান্তির জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। আজকের এই অশান্ত ও অসহিষ্ণু বিশ্বে মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ, ধর্ম-বর্ণ-জাতিতে হানাহানি রোধসহ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মহামতি বুদ্ধের দর্শন ও জীবনাদর্শ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে আমার বিশ্বাস।’
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমান কাল থেকে এদেশে প্রত্যেক ধর্মের মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে নিজ নিজ ধর্ম নির্বিঘ্নে পালন করে আসছেন। এই দেশে ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমাদের সব ধর্মের মানুষ একত্রিত হয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবগুলো অত্যন্ত আনন্দ ও প্রীতির মাধ্যমে উদযাপন করে থাকে। এই বন্ধন ভবিষ্যতেও অটুট থাকবে। আমাদের এই সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বন্ধনকে সমুন্নত রাখতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’