অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে আলোচনায় ডাক না পাওয়া নিয়ে বিব্রত বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মুহাম্মদ কাদের।
শনিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রংপুরের পল্লী নিবাসে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এসব জানান।
জিএম কাদের বলেন, আমাদের দলের একটা ঐতিহ্য আছে। পুরানো দল। দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রয়েছে। আমাদের রাষ্ট্র চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেই জায়গা থেকে এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে চেয়েছি। সহযোগিতা করে আসছিলাম। কিন্তু তারপরও আমাদের যদি রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ের আলোচনায় না ডাকা হয়, দূরে রাখা হয়, সে বিষয়ে আপত্তি নেই। তবে আমাদের নিয়ে বাইরে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। কতগুলো অভিযোগ করা হচ্ছে এবং শাস্তিস্বরুপ আমাদের ডাকা হচ্ছে না। এটি আমাদের বিব্রত করছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের সময় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। এজন্য আমাদের আওয়ামী লীগের দোসর বলা হচ্ছে। কিন্তু আপনারা জানেন, আওয়ামী লীগের সর্বশেষ নির্বাচনে আমরা অংশ নিতে চাইনি। কিন্তু আমার অফিস এবং আমাকে এক প্রকার জোর করে নির্বাচন করতে বাধ্য করেছে। এমন করেই আমার ভাইয়ের সময়ও হয়েছে। ২০১৪ সালে আমার ভাই বলেছিল বিএনপি নির্বাচনে গেলে আমরা নির্বাচনে যাব। কিন্তু বিএনপি যখন গেল না, তখন আমরা নির্বাচন করতে চাইনি। আমার ভাইকে সিএমএইচে রেখে তার এবং ভাবিসহ কয়েকজনের মনোনয়ন বৈধ করে নির্বাচন করল। সেই সরকারে আমাকে মন্ত্রীত্ব দিতে চেয়েছিল আমি নেইনি। সব মিলিয়ে আমাদের জাতীয় পার্টির একটা অংশ নির্বাচন করেছে। এই নির্বাচন নিয়ে রংপুরেও আন্দোলন হয়েছে।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের ওপর হাামলা-মামল হয়েছে। আমাদের অনেক জায়গায় অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। সরকার এটা করেনি। তবে আমাদের যে নিরাপত্তা দেয়ার কথা ছিল তা হয়তো সরকার দিতে পারেনি। তবু আমি সরকারকে দোষারপ করব না। সরকার যখন দায়িত্ব নিয়েছে, তখন সরকার ব্যবস্থা বলতে কিছুই ছিল না। একেবারে ভঙ্গুর অর্থনীতিকে সঙ্গে নিয়ে জনগণের পাহাড়সম প্রত্যাশা পুরণের লক্ষ নিয়ে সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। দুই মাসের মধ্যে সব করতে পারবে এমনটা না। তবে আমি আশাবাদি, ওনারা পারবে। তাই সরকারকে সময় দেওয়া দরকার। জাতীয় পার্টি সরকারের পাশে থেকে সহযোগিতা করবে এটি আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসীর, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আজমল হোসেন লেবু, মহানগর জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন, সহ-সভাপতি জাহিদুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতারা।
উল্লেখ্য সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে আলোচনায় কীভাবে জাতীয় পার্টি ডাক পায় এক পোস্টে এ তথ্য জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। এরপরেই জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারিতার সহযোগী হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়ে সংলাপে না ডাকার আহ্বান জানান।