নাটোরের সিংড়ায় মদনডাঙ্গা নদী দখল নিয়ে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুরসহ অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (০৮ অক্টোবর) দুপুরে সিংড়া উপজেলার ঢাকঢোর বাজারে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় এখন পর্যন্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, আত্রাই নদীর শাখা মদনডাঙ্গা নদীটি নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় হওয়ায় দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ ধরে সিংড়া উপজেলার ঢাকঢোর গ্রামের স্থানীয় একটি মাদরাসার নামে ভোগ দখল করে আসছিল ঢাকঢোর গ্রামবাসী। নদীটির অবস্থান নলডাঙ্গা উপজেলায় হলেও বরাবরই সিংড়া উপজেলার ঢাকঢোর গ্রামবাসী ভোগদখল ও ক্রয়-বিক্রয় করে শুকিয়ে মাছ শিকার করে থাকে। কিন্তু গত শুক্রবার নলডাঙ্গা উপজেলার মদনডাঙ্গা গ্রামের মৎস্যজীবীরা সেটিকে মৎস্য অভয়াশ্রম ঘোষণা করে নদীর ভেতরে একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন। নদীটিকে উন্মুক্ত রাখারও দাবি জানান স্থানীয়রা। এর পর থেকেই দুই গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে নাটোর সদর এলাকা থেকে কয়েকটি মোটরসাইকেল ঢাকঢোর বাজারে এলে তাদের নদী দখলকারী বলে স্থানীয় গ্রামবাসী মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে। আহতরা হলেস- মকুল (৩০) ও শহিদুলসহ (৩২) মোট তিনজন।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সিংড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম রব্বানী সর্দার, নলডাঙ্গার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশিকুর রহমানসহ সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা।
সিংড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসমাউল হক বলেন, সরকারি নদীতে মাছ শিকার করা নিয়ে পার্শ্ববর্তী নলডাঙ্গা উপজেলার বাসিন্দাদের সঙ্গে সিংড়া এলাকার বাসিন্দাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে মোট তিনজন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশসহ সেনাবাহিনী সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। এখন পর্যন্ত থানায় লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিংড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম রব্বানী সর্দার জানান, সরকারি নদ-নদী, খাল-বিল দখল ও বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি জানার পর সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পাঁচটি ভাঙচুর করা পরিত্যক্ত মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেওয়ান আকরামুল হক বলেন, সংঘর্ষের খবর জানতে পেরে নলডাঙ্গার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) পাঠিয়েছি। মূলত নদীতে মাছ শিকারকে কেন্দ্র করেই ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাস্থলে সিংড়া এলাকার লোকজন ছিল। এদিকে মদনডাঙ্গা গ্রামবাসীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। তাদের আশ্বস্ত করেছি যে যা ঘটেছে তার যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।