টেস্ট সিরিজ শেষে এবার সাদা বলের লড়াইয়ে ফিরছে বাংলাদেশ ও ভারত। দুই দল তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৬ অক্টোবর থেকে মুখোমুখি হবে। প্রথম টি-টোয়েন্টি মাঠে গড়াবে গোয়ালিয়রে, যেখানে প্রায় ১৪ বছর পর গড়াবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। তবে এই ম্যাচটি অনেক আগে থেকেই হিন্দু ধর্মাবলম্বী সংগঠনের আক্রোশের মুখে রয়েছে। তাদের প্রতিবাদের মুখে শহরটিতে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা দিচ্ছে পুলিশ।
শ্রীমান মাধবরাও ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এর আগে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছিল ২০১০ সালে। তবে এখন গোয়ালিয়র শহরটি আলোচনার কেন্দ্রে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদলের পর হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ ও তাদের বাড়ি-ঘরে হামলার অভিযোগে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা। এরপর প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচের দিন ‘গোয়ালিয়র বনধ’ তথা কঠোর কর্মসূচির ডাক দিয়েছে হিন্দু মহাসভা।
একই দাবিতে তারা স্টেডিয়ামে আশপাশের এলাকায় মিছিল ও সভাও করেছে। যেখান থেকে কমপক্ষে ১৯ বিক্ষোভকারীকে আটকের খবর জানায় স্থানীয় পুলিশ। ম্যাচটিকে ঘিরে গোয়ালিয়রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে মানুষের চলাচল ও কর্মকাণ্ড সীমিত করার কথা জানিয়েছেন গোয়ালিয়রের কালেক্টর ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রুচিকা চৌহান। সংবাদমাধ্যম ফ্রি প্রেস জার্নাল তার বরাতে জানিয়েছে, ভারতের সিভিল ডিফেন্স কোড ১৬৩ ধারার অধীনে (কর্মকাণ্ড) সংরক্ষিত আদেশ জারি করা হয়েছে। যা সক্রিয় থাকবে ৭ অক্টোবর (ম্যাচের পরদিন) পর্যন্ত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি জানায়, বিক্ষোভকারী সংগঠনগুলো শহরে প্রতিবাদী আয়োজনে র্যালি ও কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। সে কারণে স্থানীয় পুলিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পর্যন্ত কড়া নজর রেখেছে। যাতে এই পরিস্থিতিকে উসকে দেওয়া কোনো বার্তা, ছবি কিংবা ভিডিও কেউ ছড়াতে না পারে। এ ছাড়া সঙ্গে কোনো অস্ত্র কিংবা আঘাত করার উপযোগী বস্তু রাখাও নিষিদ্ধ। ম্যাচটি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করার লক্ষ্যে পুরো শহর নিরাপত্তার ছাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, প্রথম টি-টোয়েন্টি খেলতে গতকাল (বুধবার) বিকেল ও সন্ধ্যায় ভাগ হয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের ক্রিকেটাররা গোয়ালিয়রে পৌঁছে গেছেন। নিরাপত্তা বিঘ্ন ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় পুলিশের ব্যাপক তৎপরতা রয়েছে। বিমানবন্দর থেকে ভারতীয় দল সামনের গেইট দিয়ে বেরোলেও, বাংলাদেশ দলকে হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয় পেছনের গেইট দিয়ে। নিরাপত্তা বেষ্টনির মাঝেই পরে নাজমুল হোসেন শান্তর দলকে হোটেলে পৌঁছে দেওয়া হয়।
ভারতের আরেক সংবাদমাধ্যম টাইম অব ইন্ডিয়া বলছে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের জন্য শঙ্করপুর ক্রিকেট স্টেডিয়াম এলাকায় তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা হোটেল থেকে স্টেডিয়াম এলাকা পর্যন্ত সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছেন। ১৬০০ সদস্য আছেন নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কাজে। এ ছাড়া ২৬টি স্থানে ড্রপ গেইট এবঙ ১৪টি স্থানে দেওয়া হয়েছে ব্যারিকেড।