দলের একমাত্র বিশেষজ্ঞ অফস্পিনার ছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। এছাড়া পার্টটাইমার হিসেবে অফস্পিন করার মতো ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। তবে আফিফ ও মাহমুদউল্লাহকে বোলিংয়ে আনেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
অবশ্য তাদেরকে বোলিংয়ে আনার প্রয়োজনীয়তাই অনুভব করতে দেননি মেহেদি মিরাজ। শ্রীলঙ্কার পক্ষে ইনিংসের সূচনা করেছিলেন দুই বাঁহাতি কুশল পেরেরা ও দানুশকা গুনাথিলাকা। তাই প্রথম ওভারেই মিরাজের হাতে বল তুলে দেন তামিম, পান সাফল্যও।
ইনিংসের পঞ্চম ও নিজের তৃতীয় ওভারে গুনাথিলাকাকে ফিরিয়ে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন মিরাজ। চার ওভারের প্রথম স্পেলে মাত্র ১১ রান খরচ করেন তিনি। পরে দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে ম্যাচটাই পুরো বাংলাদেশের হাতে এনে দেন। যেখানে প্রথম ৪ ওভারে দুই মেইডেনসহ মাত্র ৩ রান খরচায় নেন আরও ২ উইকেট।
নিজের শেষ দুই ওভারে আরও এক উইকেট নিলেও, ১৬ রান খরচ করেন মিরাজ। ফলে বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ১০-২-৩০-৪, যা ছিল বাংলাদেশের জয়ের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। এমন পারফরম্যান্সের সুবাদে ম্যাচের মোস্ট ভ্যালুয়েবল খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন মিরাজ।
ম্যাচ শেষে সেই পুরস্কার গ্রহণ করতে এসে জানিয়েছেন, তিনি বোলিংয়ে বিশেষ কিছু করেননি। সবসময় রান আটকানোর যে বোলিং করেন, সেটিই করার চেষ্টা চালিয়েছেন তিনি এবং অপেক্ষা করেছেন ব্যাটসম্যানদের ভুল করার। আর সেই ভুলটি এ ম্যাচে করেছেন শ্রীলঙ্কার চার ব্যাটসম্যান।
প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের ভুল করতে দিয়ে নিজে বাজিমাত করার বিষয়টি তুলে ধরে মিরাজ বলেছেন, ‘আমার পরিকল্পনা হল সবসময় যা করি তা করার, রান আটকানো। এতে ব্যাটসম্যান ভুল করলে চান্স আসে। আমি চেষ্টা করেছি যেন ডট বল বেশি করতে পারি।’
এসময় তিনি জানান, সিরিজ শুরুর আগে দুই দেশি কোচ সোহেল ইসলাম ও নাজমুল আবেদিন ফাহিমের সঙ্গে কাজ করার সুবাদে নিজের বোলিংয়ে উন্নতি করতে পেরেছে। তাই নিজের কোচ তথা শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ভোলেননি তিনি। ড্যানিয়েল ভেট্টোরি না থাকায় বেশ কিছু দিন ধরেই জাতীয় দলের স্পিন বোলিং কোচের দায়িত্ব সামাল দিচ্ছেন সোহেল ইসলাম।
মিরাজ বলেছেন, ‘আমি বোলিং করছি নেটে এবং দেশি যে কোচ আছেন (সোহেল ইসলাম) তার সঙ্গে কথা বলছি কীভাবে কী করলে ভাল হয়। এছাড়া ফাহিম স্যার তিন-চারদিন আগে আমাকে ফোন দিয়েছিলেন, শ্রীলঙ্কায় টেস্ট খেলার সময় থেকেই বোলিংয়ের বিভিন্ন দিক নিয়ে গাইডলাইন দিচ্ছেন। আমি চেষ্টা করেছি যেসব মেনে বল করার। সোহেল স্যারের সঙ্গে তো এখন সামনে থেকেই কাজ করতে পারছি। আমি মনে করি যে স্যাররা আমাকে ভালো গাইড করেছে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘ উইন্ডিজের বিপক্ষে জয়ের পর আমরা অনেকদিনই আন্তর্জাতিকে ম্যাচ জিততে পারছিলাম না । টেস্টে ভালো খেলছিলাম কিন্তু জিততে পারছিলাম না। আমি মনে করি এই ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ওয়ানডেতে তো আমরা সবসময়ই ভালো খেলি আর এই ম্যাচে আমাদের সবাই পারফরম করেছি তাই জয়টা সহজে এসেছে।’