ছাত্র-জনতার আন্দোলনে র্যাবের হেলিকপ্টার থেকে কারও ওপর গুলি ছোড়া হয়নি বলে দাবি করেছেন বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুনীম ফেরদৌস। তিনি দাবি করেন, র্যাবের হেলিকপ্টার থেকে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে।
বুধবার (২ অক্টোবর) সকালে কারওয়ান বাজারে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মুনীম ফেরদৌস।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। শুরুর দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও দৃশ্যপট বদলে যায় ১৮ জুলাই। শিক্ষার্থীদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউনকে কেন্দ্র করে সেদিন দেশব্যাপী ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে আন্দোলন আরও সহিংস হয়ে ওঠে। এসব সহিসংতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে মারা যান বহু মানুষ।
ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে ব্যাপক গুলিবর্ষণ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। র্যাবের হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোড়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি সত্য নয় বলে পরে র্যাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল।
বিষয়টি নিয়ে আজ আবারও প্রশ্ন করা হলে এলিট ফোর্সটির মুখপাত্র বলেন, র্যাবের হেলিকপ্টার থেকে গুলি নয়, শুধু টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে। যদি আপনাদের (সাংবাদিকদের) কাছে কোনো অভিযোগ থাকে তবে আমরা তা খতিয়ে দেখব।
মুনীম ফেরদৌস বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় যাদের সম্পৃক্ততা আছে, ভিডিও ফুটেজ দেখে দেখে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। আরও ৩০ থেকে ৪০ জনকে শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। যারা হেলমেট পরা অবস্থায় হামলায় অংশ নিয়েছিল, তাদেরও শনাক্ত করা হচ্ছে।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১৭০ জনকে র্যাব গ্রেফতার করেছে বলেও জানান বাহিনীটির মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।
র্যাবের এই মুখপাত্র জানান, আরও বেশ কয়েকজন নজরদারিতে আছেন। এছাড়া হামলার ঘটনায় ৩৯ জন নির্দেশদাতা নেতাকেও গ্রেফতার করেছে র্যাব। একইসঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে ২১৯টি অস্ত্রসহ গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে গত ২৮ সেপ্টেম্বর গুলশান-২ নম্বরে অবস্থিত একটি মুদি দোকানের ভেতর থেকে দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে গুলশান থানা পুলিশ। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় মূল সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
এই হত্যার ব্যাপারে র্যাব মুখপাত্র জানান, আর্থিক লেনদেনের দ্বন্দ্বের জেরে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পুলিশের অনেক সদস্য এখনো পলাতক থাকলেও র্যাবের কোনো সদস্য পালিয়ে যায়নি দাবি করেন মুনীম ফেরদৌস। তিনি বলেন, বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা কর্মবিরতিতে গেলেও কোনো র্যাব সদস্য কর্মবিরতিতে যায়নি এবং কোনো র্যাব সদস্য পালিয়ে যায়নি।