অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে একটি গোষ্ঠী অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সরকারের তিন উপদেষ্টা। তারা জানান, অন্তর্বর্তী সরকারকে একটি বিশেষ পরিস্থিতির মধ্যে ফেলতে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
গত তিনদিন পার্বত্য তিন জেলায় ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর সেখানে পরিদর্শনে যান সরকারি তিন উপদেষ্টা। তাদের পরিদর্শনের বরাত দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি সফর করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিষয়ক উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
শনিবার রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় জনগণ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।
উপদেষ্টারা রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলা সদরে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, ব্যবসায়ী/বাণিজ্য সংস্থার প্রতিনিধি, মিডিয়া প্রতিনিধি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং জেলা পরিষদের প্রতিনিধিদের সাথে দেখা করেন এবং পরিস্থিতির হঠাৎ অবনতিতে অংশগ্রহণকারীদের উদ্বেগের কথা শোনেন।
উপদেষ্টারা আরও উল্লেখ করেছেন যে অন্তর্বর্তী সরকারকে একটি বিশেষ পরিস্থিতির মধ্যে ফেলতে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে, সবাইকে পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক থাকতে বলেছেন।
এ সময় এলাকায় কর্মরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ সংযম দেখাতে বলা হয়েছে।
উপদেষ্টারা স্থানীয় জনগণকে আশ্বস্ত করেছেন যে গত তিন দিনে ঘটে যাওয়া সমস্ত ঘটনা তদন্তের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে এবং অন্যায়কারীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
ধর্মীয় উপাসনালয়ে কোনো হামলা বরদাস্ত করা হবে না বলে আশ্বাস দেন তারা।
উপদেষ্টারা বলেন, পরিস্থিতি নির্বিশেষে কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না এবং কেউ নির্দেশ অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
তারা বলেন, আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে এবং প্রয়োজনে আহতদের চিকিৎসার জন্য সামরিক হাসপাতালের ব্যবস্থা করা হবে।
সম্প্রীতি ও শান্তি বজায় রাখার জন্য গ্রাম/ইউনিয়ন/উপজেলা পর্যায়ে সকল সম্প্রদায়ের লোকদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করার ওপর জোর দেন তাঁরা।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে গণপিটুনিতে এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। এরপর পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে।
উপদেষ্টারা যারা তাদের জীবন হারিয়েছেন তাদের জন্য গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন এবং তারা সকলেই জাতি, ধর্ম বা জাতি নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি, সহানুভূতি এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন।
এ সময় তারা পার্বত্য অঞ্চলে সম্প্রীতি ও শান্তি বজায় রাখার দায়িত্ব স্থানীয় নেতাদের উপর বর্তায় উল্লেখ করে উপদেষ্টারা বলেন, এসব ঘটনা এড়াতে এখন থেকে যথাযথ দায়িত্ব পালন করবেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ উপস্থিত ছিলেন।